এইদিন ওয়েবডেস্ক,উত্তর ২৪ পরগণা,১০ মার্চ : বিজেপির অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বলে প্রায়ই বাজার গরম করার চেষ্টা করতে দেখা যায় রাজ্যের শাসকদলকে । কিন্তু আজ রবিবার বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সন্দেশখালীর ন্যাজোটে দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদারকে নিজের ভাই বলে সম্মোধন করে শাসক দলের সেই চেষ্টাতে জল ঢেলে দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । মুখ্যমন্ত্রীর নাম না করে শুভেন্দু বলেন, ‘আপনি একা ফুটেজ খাবেন কেন, আপনি যেখানে যাবেন আমরা দু’ভাই সুকান্ত ও শুভেন্দু আপনার পিছু তাড়া করবে । পিসিকে প্রাক্তন করব ।’
প্রসঙ্গত কলকাতার ধর্মতলায় আজ তৃণমূল কংগ্রেসের জনসভা ছিল । গাড়ি পাল্টা হিসেবে সন্দেশখালীর ন্যাজোটে জনসভার ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী । বিজেপির প্রথম শ্রেণীর এক ঝাঁক নেতার সাথে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও । বিরোধী দলনেতা ও রাজ্য সভাপতি দুজনেরই নিশানায় ছিল ‘পিসি ও ভাইপো’ অর্থাৎ মমতা ব্যানার্জি ও অভিষেক ব্যানার্জি ।
শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, ‘ ‘মমতা ব্যানার্জি নাকি মহিলা দরদী, তিনি নাকি ৫০০ টাকা হাজার টাকা অনেক কিছু দিয়েছেন। কিন্তু দু’মাসের বেশি সময় হয়ে গেলো কিন্তু তিনি সন্দেশখালিতে আসার প্রয়োজন অনুভব করেননি । অথচ বিকাশ সিংহ ৭৬ জনকে জেল খাটিয়েছেন । আমাদের রেখা পাত্র, পদ্মা দিদি সহ মাতৃ মন্ডলীর ওপর পুলিশকে দিয়ে অত্যাচার করিয়েছেন ।’
শুভেন্দুর অভিযোগ যে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও বাকিবুর রহমানরা রেশনের চাল,ডাল,গম শেখ শাহজাহানের মাধ্যমেই বাংলাদেশের সাতক্ষীরাতে পাচার করত । এরপর তিনি শাহজাহান প্রসঙ্গে সিপিএমকে নিশানা করে বলেন, ‘শাহজাহান কার সৃষ্টি ? শাহজাহানকে সিপিএম তৈরি করেছিল । সন্দেশখালির ঘটনায় আপনাদের হয়ে লড়াই করার সিপিএমের কোন অধিকার আছে ? বিজেপি সন্দেশখালীর লড়াইকে দিল্লি পর্যন্ত নিয়ে গেছে । দিল্লির জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি এবং সুকান্ত মজুমদার সন্দেশখালীর ঘটনা তুলে ধরেছি ।’ তিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে আবেদন জানান,’একা শাহজাহানকে পুরলে হবে না, জিয়ারউদ্দিন মোল্লা, আলমগীর, শাহানুর সহ সব গুন্ডাকে জেলে ঢোকাতে হবে ।’
পাশাপাশি তার অভিযোগ, ‘একা সন্দেশখালি নয় পশ্চিমবঙ্গে এমন ২৫ থেকে ৩০ টা সন্দেশ খালি আছে । বিজেপি মমতা ব্যানার্জির আলালের দুলাল শেখ শাহজাহানদের ছাড়বে না । কথা দিলাম হিঙ্গলগঞ্জ ফাঁকা করব, মিনাখা পাক ফাঁকা করব, হাড়োয়া ফাঁকা করব, বাসন্তী ফাঁকা করবো, গোসাবা ফাকা করব, ক্যানিং ফাঁকা করব, ফলতা ফাঁকা করব, ভাঙ্গড় ফাঁকা করব, বসিরহাট গ্রামীণ ফাঁকা করব, বাদুড়িয়া ফাঁকা করব, এক টাকেও ছাড়বো না ।’পুলিশকে হুঁশিয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে শুভেন্দু বলেন,’যতই মোবাইল ফোন দোকান না কেন সব নম্বর আমাদের কাছে আছে।’
এদিনের জনসভায় সুকান্ত মজুমদার বলেন,’মাননীয় শুভেন্দু অধিকারী আপনাদের জন্য কোর্টের ভিতরেও কোর্টের বাইরে বহু লড়াই করেছেন । জোরে হাততালিতে ওনাকে একবার স্বাগত জানাবেন ।’ তিনি বলেন,’তৃণমূল কংগ্রেস গান বাজা তো ‘খেলা হবে’, এখন বাজাচ্ছে ‘খেলা হলো বিহারে ভাইপো যাবে কি তিহারে’ । বিহারের লালু আউট, মোদী ইন । এবারে ভাইপোর টাইম আসছে,আপনারা সবাই তৈরি হন ।’ সন্দেশখালীর মহিলাদের প্রতিবাদী মানসিকতার প্রশংসা করে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘সন্দেশখালির মায়েদের দেখে আমরা লড়াই করার সাহস পেয়েছি, আপনাদের প্রণাম ৷’।