এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৫ জুন : বাড়ির সদর দরজার সামনে দু’হাতে মাথা চেপে ধরে টলছিল অজ্ঞাতপরিচয় এক কিশোরী । মেয়েটি অসুস্থ বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ধরে বাড়িতে নিয়ে এসে শুশ্রুষা করেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার মুরাতিপুর বাজারের বাসিন্দা মহম্মদ বদরুদ্দোজা ও আনারকলি খাতুন নামে এক দম্পতি । মেয়েটি কিছুটা সুস্থ হলে তাকে দুপুরের খাবার খাওয়ান তাঁরা । তারপর স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার মাধ্যমে খবর পেয়ে ভাতার থানায় পুলিশ গেলে কিশোরীকে পুলিশের হাতে তুলে দেন দম্পতি । দম্পতির মানবিকতায় মুগ্ধ এলাকাবাসী । দম্পতি জানিয়েছেন, বারবার জানতে চাওয়া হলেও মেয়েটি তার নাম ঠিকানা সঠিক করে জানাতে পারেনি । পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটির নাম ঠিকানা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে ।
জানা গেছে,মুরাতিপুর গ্রামে বলগোনা-গুসকরা সড়ক পথের ধারেই বাড়ি পেশায় চাষি মহম্মদ বদরুদ্দোজার । এদিন দুপুরে তিনি ঘরে শুয়েছিলেন। তাঁর স্ত্রী গৃহস্থালীর কাজকর্ম করছিলেন । বদরুদ্দোজার স্ত্রী আনারকলি খাতুন বলেন, ‘বাড়ির সদর দরজা খোলাই ছিল । কাজ করতে করতে হঠাৎ দরজার দিকে নজর পড়তেই দেখি ১২-১৩ বছরের এক কিশোরী দু’হাতে নিজের মাথা চেপে ধরে টলছে । বুঝতে পারি মেয়েটি খুব অসুস্থ । তারপর ওকে ধরে বাড়িতে আনি । মাথায় জল ঢালি । কিছুটা সুস্থ হলে ভাত খেতে দিই । মেয়েটি বলে তার শরীরে খুব ব্যাথা হচ্ছে । তখন তাকে ব্যাথা কমানোর একটা ওষুধ এনে দিই ।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘আমরা চাই মেয়েটি সুস্থ ভাবে বাড়ি ফিরুক।’
জানা গেছে,মেয়েটি কিছুটা সুস্থ হলে ওই দম্পতি মুরাতিপুরের বাসিন্দা শেখ আমির নামে এক তৃণমূল নেতাকে বিষয়টি জানান । তারপর ওই তৃণমূল নেতা ভাতার থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় ।
শেখ আমির বলেন, ‘মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করলে বলে তার বাবা ও মা মিলে জোর করে তাকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল । সে রাজি না হওয়ায় তাকে প্রচন্ড মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে । কিন্তু মেয়েটি তার মা-বাবা, এমনকি তাদের গ্রামের নাম পর্যন্ত বলেনি । মনে হয় খুব আতঙ্কে আছে বলে মুখ খুলতে চাইছে না । আমরা চাই পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নিক ।’।