জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান), ০৮ মার্চ : শ্রমিক আন্দোলন রূপে যা শুরু হয়েছিল ক্লারা জেটকিনের সৌজন্যে সেটি শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ‘নারী দিবস’ রূপে পরিগণিত হয় । ৮ মার্চ দিনটি আন্তর্জাতিক ‘নারী দিবস’ হিসাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হতে শুরু করে। এই উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয় সেমিনারের। নারী সমাজ সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে কতটা সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে সেটা নিয়ে চলে তাত্ত্বিক আলোচনা।
প্রচলিত ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম-২ ব্লক চত্বরে ভিন্ন আঙ্গিকে দিনটি পালন করল ‘উজ্জ্বয়িনী ফার্মাস প্রোডিউসার কোম্পানি লিমিটেড’। এলাকার প্রান্তিক মহিলা চাষীদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে গ্রাণ্ট থর্নটন এর সহযোগিতায় ‘স্ত্রী’ প্রকল্পের অধীনে একটি মশলা প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্রের উদ্বোধন করা হয়।
জানা যাচ্ছে যে সম্পূর্ণ গুণমান ও বিশুদ্ধতা বজায় রেখে এখানে ধনে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো প্রভৃতি মশলা তৈরি করা হবে এবং কোম্পানির নিজস্ব ব্রাণ্ডিংয়ের মাধ্যমে সেটি বাজারে সরবরাহ করা হবে। পরে কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়গুলির দিকে নজর দেওয়া হবে। এই ব্যবস্থার ফলে কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত এলাকার ৭৫০ জন মহিলা চাষী উপকৃত হবেন এবং তারা আয়ের একটা পথ খুঁজে পাবে। একইসঙ্গে উপকৃত হবে এলাকার বাসিন্দারা। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, স্থানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার, সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক চিন্ময় দাস, বিশিষ্ট সমাজসেবী লালন সেখ, আউশগ্রাম-২ ব্লকের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, গ্রান্ট থর্নটন ভারতের ডিরেক্টর রিশু রবি, ম্যানেজার মনীশ সিংহ, প্রসূন সাধুখাঁ এবং সংস্থার পূর্ব বর্ধমান জেলার উপদেষ্টা ড. রাপ্তী পান সহ অন্যান্যরা।
অনুষ্ঠানে প্রত্যেক বক্তা ‘নারী দিবস’-এ নারীদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে সংস্থাটির এই মহতি উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তাদের বক্তব্য এরফলে এই এলাকার সঙ্গে সঙ্গে অন্য এলাকার মহিলা চাষীরা উৎসাহিত হবে। অন্যদিকে কৃষিতে কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাংসদ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন।
পুলিশ আধিকারিক হিসাবে নারী নির্যাতনের কারণ সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরার পাশাপাশি কন্যা সন্তানকে প্রতিষ্ঠা লাভ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য প্রকৃত জননীর মত উপস্থিত মহিলাদের অনুরোধ করেন বর্ধমান মহিলা থানার আইসি কবিতা দাস। তার এই পরামর্শ মহিলাদের মধ্যে যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। সংস্থার পক্ষ থেকে রাপ্তী দেবী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য আগামীদিনে আরও বেশি সংখ্যক মহিলা চাষীদের এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা। এরফলে মহিলারা আর্থিক দিক দিয়ে স্বনির্ভর হবে ।’সহযোগিতার জন্য সমাজসেবী শেখ লালনসহ অন্যান্যদের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন,’আশাকরি আগামী দিনেও তার এবং অন্যান্যদের সহযোগিতা আমরা পাব।’।