এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৭ মার্চ : উত্তর ২৪ পরগণা জেলার সন্দেশখালির ‘ত্রাস’ শেখ শাহজাহানকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে বহু টালবাহানা করেছে রাজ্য পুলিশ । অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের ডেডলাইনের প্রায় চার ঘন্টা পর বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয় । ‘শাহজাহানকে বাঁচানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কেন প্রাণপণ চেষ্টা করলেন’ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ।
শুভেন্দু নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে এনিয়ে লিখেছেন, ‘শাহজাহান শেখের রক্ষাকর্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে জবাব দিতে হবে কেন তিনি মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে সন্দেশখালির সন্ত্রাসবাদী শাহজাহান শেখকে বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা করলেন।
বাংলার লক্ষীদের সম্মানহানীর ঘৃণ্য অপরাধ যে ব্যক্তি করেছে তার মূল্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এত বেশি কেন?’
সন্দেশখালি কাণ্ডের মূল আসামি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা শেখ শাহজাহান । দীর্ঘ ৫৬ দিন পর বিভিন্ন মহল থেকে চাপে পড়ে তাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় পুলিশ । কিন্তু সিবিআই শাহজাহানকে নিজেদের হেফাজতে চাইলে রাজ্য পুলিশ বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে বলে অভিযোগ । মঙ্গলবার সন্দেশখালি কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ । আদালতের নির্দেশে অনুযায়ী ওইদিন বিকেল সাড়ে চারটের মধ্যে শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল । কিন্তু পুলিশ আদালতের সেই নির্দেশ অমান্য করে শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয়নি। পুলিশের তরফে যুক্তি দেখানো হয় যে যেহেতু সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে তাই শাহজাহানকে হস্তান্তর করা যাবে না। কিন্তু বুধবার সুপ্রিম কোর্টও এই মামলায় হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকার করে । অভিষেক মনু সিংভির মত দেশের প্রথমসারীর আইনজীবীকে লাগিয়েও বিফল হতে হয় মমতা-অভিষেক ব্যানার্জিদের ।
মঙ্গলবার বিকেল থেকে সিবিআই আধিকারিকরা দীর্ঘক্ষণ ভবানী ভবনে বসে থেকে শাহজাহানকে হাতে না পেলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি) কে ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হয় । রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলে ইডি । শেষে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে বুধবার বিকেলে ডেডলাইন বেঁধে দেয় । তাসত্ত্বেও আদালতের নির্দেশ মেনে নির্ধারিত সময়ে পুলিশ শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয়নি । ফের আদালতের দ্বারস্থ হতে হয় ইডিকে । অবশেষে আদালত নির্দেশিত প্রায় ৪ ঘন্টা পর পর পুলিশ শাহজাহানের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে তাকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয় । এই ঘটনায় স্পষ্ট যে কোনো অবস্থাতেই ধর্ষণ-গনধর্ষণ, জোর করে জমি-জায়গা দখলের ঘটনার মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে রাজি ছিল না মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন রাজ্যের শাসকদল ।।