নীহারিকা মুখার্জ্জী, ফলতা,০২ মার্চ : এযেন সব দিক দিয়েই এক ব্যতিক্রমী বিদ্যালয়। বাইরে থেকে ভবনটি দেখলে মনে হবে কোনো এক কর্পোরেট সংস্থার সুসজ্জিত প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভিতরের সুদৃশ্য টয়লেটগুলো দেখলে মনে হবে কোনো এক সৌখিন মানুষের বাড়ির অভ্যন্তরে প্রবেশ করা হয়েছে। এটা আসলে বিখ্যাত বাঙালি বৈজ্ঞানিক আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর স্মৃতিধন্য দক্ষিণ ২৪ পরগণার ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষক- শিক্ষিকাদের কাছে বিদ্যালয়টি যে প্রকৃত অর্থে সন্তানতুল্য তার প্রমাণ পাওয়া গেল বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠা দিবসে
১৯৪২ সালের পয়লা মার্চ মাটির দেওয়াল ও টালির চাল দেওয়া ‘হাটের স্কুল’ হিসাবে গড়ে ওঠে বিদ্যালয়টি। ১৯৯৯ সালে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে যোগ দেন তিলক নস্কর এবং ২০১০ সালে প্রধান শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন। তার হাত ধরেই বিদ্যালয়ের আমূল পরিবর্তন ঘটে এবং বিদ্যালয়টি অভিনব উচ্চতায় পৌঁছে যায়। পাশে পান তার সহকর্মী সহ মিড ডে মিলের রন্ধন কর্মীরা এবং বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের। একের পর এক পুরস্কার পেয়ে ভরে ওঠে বিদ্যালয়ের ঝুলি। বিদ্যালয়ের ঝুলিতে অনেক কিছু জমা হলেও একটা জায়গায় তাদের আক্ষেপ থেকে গিয়েছিল। বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ছিলনা ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের কোনো মূর্তি। এবার বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসে সেই আক্ষেপ মিটিয়ে দেন প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর। তিনি তার ‘শিক্ষারত্ন’ পুরষ্কার থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তৈরি করে দেন ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের পূর্ণ দৈর্ঘ্যের মূর্তি। প্রতিষ্ঠা দিবসে মূর্তিটির উদ্বোধন করেন ফলতা সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক শানু বক্সী। শুধু তাই নয় বিদ্যালয়ের রীতি মেনে কেক কেটে ৭০ জন শিক্ষার্থীর জন্মদিন পালন করা হয়। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটা করে জলের বোতল ও ক্যাডবেরি। বিদ্যালয়ের ক্ষুদে ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশিত নৃত্য, সঙ্গীত, আবৃত্তি, নাটক প্রভৃতি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি অন্যরূপ ধারণ করে।
উপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর ছাড়াও বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী, মিড ডে মিল আধিকারিক, ফলতা পঞ্চায়েত প্রধানও উপপ্রধান এবং এলাকার বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তিলক বাবুর ছোট্ট প্রতিক্রিয়া – আজ আমাদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। যতদিন বেঁচে থাকব বিদ্যালয়ের সেবা করে যাব।।