তোমায় অসাধারণ করার খেলায় মেতে কখন যে বড্ড সাধারণ হয়ে গেছি খেয়ালই করা হয়নি। আজ যখন বুঝেছি তখন সত্যি তোমার পাশে আমি খুব বেমানান। হিসেব কষতে বসে ফিরে গেছিলাম সেই দশ বছরের পুরোনো দিনে। তখন দুজনেই একদম সাধারণ। শহরে বড় হয়েও তেমন আধুনিকা হয়ে উঠিনি কোনোকালেই।খুব সাদামাটা জীবনেই অভ্যস্ত ছিলাম আমি।কিন্তু হঠাৎই এক কালবৈশাখী হয়ে এসেছিলে আমার জীবনে।সেই ঝড় আমি সামলাতে পারিনি স্বীকার করি,ভেসে গেছিলাম।কিন্তু কি আশ্চর্যের বিষয় যেই হাতে ভরসা করে ভাসতে চেয়েছিলাম, সেই হাত যে মাঝসমুদ্রে শুধু ছেড়ে দিয়েছিলে তাই নয় ঐ হাতটাই হয়তো দায়িত্ব নিয়ে ডুবিয়ে দিতে চেয়েছিল আমার জীবনতরী। জীবন সায়াহ্নে এসে অনুভব করি কিছুই করা হলোনা এই জীবনে নিজের জন্য।আসলে তোমার আর আমার কোনোদিনো আলাদা করে ভাবতেই পারিনি যে,তাই তোমার প্রাপ্তিতেই সুখ খুঁজেছি। তোমার সাফল্যে ছেলেমানুষের মতো অহংকারও করেছি। শুধু নিজের প্রাপ্তির ডালি চিরকাল শূন্যই থেকে গেছে।তোমায় সূর্যের দীপ্তি হতে দিয়ে আমি চাঁদের ম্লান জোৎস্না নিয়েই তো দিব্যি খুশি ছিলাম।কিন্তু চাঁদনি রাতের আবেগ তুমি অনুভব করতে পারলে কই।নিজের তীব্র তেজের দেখনদারির জৌলুসে শান্ত ভালোবাসার গভীরতা মাপতে পারলে কই? রূপের পেছনে, ঐশ্বর্যর পেছনে ছুটতে ছুটতে শুধু সুখটাই অধরা রয়ে গেলো তোমার কাছে। আজ তুমি মস্ত মানুষ, টাকা, বাড়ি, গাড়ি কোনোকিছুরই অভাব নেই।অথচ কি ভীষণ গরীব তুমি! বলতে দ্বিধা নেই আজ করুণা হয় তোমার ভালোবাসাহীন এক জড়পদার্থের জীবন দেখে। যেই মানুষটা শুধু তুমি কেন্দ্রিক হয়ে বাঁচতে চেয়েছিল, নিজের সমস্ত ভালোবাসা উজাড় করে দিয়েছিলো তোমায় জিতিয়ে দিতে সেই আমিটা আজ বড্ড শান্ত, খানিকটা ক্লান্তও বুঝি। একতরফা ভালোবাসতে বাসতে হৃদয়ও আজ রূক্ষ মরুভূমি, ফুল ফোটানোর সাধ্যি নেই আর।কিন্তু আমার আমিকে হারিয়েও তোমাকে তো জিতিয়েই দিলাম এই খুশিটুকুই সম্বল করে এই পরাজিত সৈনিকের গড্ডালিকা প্রবাহের মতন জীবন কেটেই যাবে।প্রিয়জন হওয়া সকলের ভাগ্যে থাকেনা,আমি নাহয় প্রয়োজন হয়েই রইলাম। তোমার জীবনের স্বাদে নুনের অস্তিত্ব হতে চাই, যার উপস্থিতি দেখা না গেলেও অনুপস্থিতি এলোমেলো করে দেয় সবকিছু। তবে আমি আজও সুখী, অপ্রাপ্তি, অবহেলা আর একাকিত্বকে খুব ভালোবেসেফেলেছি যে। প্রত্যেকটা অবহেলার আভরণে সাজাই তোমার দেওয়া যন্ত্রণাবিদ্ধ তোমারই সখের মহারানিকে।।