এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,০১ মার্চ : বাংলাদেশের মাদ্রাসায় ফের পড়ুয়াদের ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে । এবারে ৬ পড়ুয়াকে লালসার শিকার বানানো সমকামী প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার পৌরশহরের আলহেরা মাদ্রাসায় । ঘটনার কথা জানাজানি হলে বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে ক্ষিপ্ত অভিবাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা মাদ্রাসায় গিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । এদিকে তার আগেই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহম্মদ মিজানুর রহমান (৩৮)কে তড়িঘড়ি চাকরি থেকে বরখাস্ত করে দেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ । উলটে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় থানায় ফোন করে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে পুলিশকে জানায় । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে আসল রহস্য জানতে পারে এবং সমকামী শিক্ষককে গ্রেফতার করে । ধৃত শিক্ষক নীলফামারীর সদর উপজেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ভবানীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ও লতিফুর রহমানের ছেলে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
জানা গেছে,ধৃত হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহম্মদ মিজানুর রহমান দীর্ঘ দিন ধরেই পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার পৌরশহরের আলহেরা মাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিল । মাদ্রাসায় আবাসিক ও অনাবাসিক ব্যবস্থায় পাঠদান চালু আছে । শিক্ষক মোহম্মদ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাত হলেই একজন করে ছাত্রকে নিজের ঘরে ডেকে এনে তার অপ্রাকৃত যৌন লালসার শিকার বানাতো । এভাবে অন্তত ৬ জন আবাসিক পড়ুয়াকে সে শিকার বানিয়েছে । মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) ঘটনার কথা জানতে পারে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ । কিন্তু কর্তৃপক্ষ পুলিশকে না জানিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে গোপনে চাকরিচ্যুত করে । কিন্তু বিষয়টি কোনো ভাবে পড়ুয়াদের অবিভাবকদের কানে চলে যায় । ঘটনার কথা চাওড় হলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা । বুধবার তারা মাদ্রাসার সামনে জড়ো হয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । এদিকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পুলিশকে ফোন করে ক্ষিপ্ত জনতার বিরুদ্ধে ভাঙচুরের মিথ্যা অভিযোগ জানায় । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশবাহিনী । আসে সাংবাদিকরাও । তখন শিক্ষকের লালসার শিকার ৬ পড়ুয়া পুলিশ ও সাংবাদিকদের সামনে তাদের উপর ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা বর্ণনা করলে পুলিশ আসল ঘটনার কথা জানতে পারে ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই প্রথম ঘটনা নত,দুই বছর আগে এক ছাত্রকে ধর্ষণ করেছিল শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহম্মদ মিজানুর রহমান । ছাত্রদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে ও মারধর করে সে সমস্ত অপকর্ম করত । দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম বলেন,’ ঘটনার সত্যতা জানার পর আমরা অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করেছি। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে ।’
প্রসঙ্গত,বাংলাদেশের মাদ্রাসাগুলিতে প্রায়ই শিক্ষকদের যৌন নির্যাতনের শিকার হয় পড়ুয়ারা । বহু ঘটনা ধামাচাপা দিতে সক্ষম হলেও কিছু ঘটনা প্রকাশ্যে আসে । ধর্ম শিক্ষা দিতে আসা শিক্ষকদের এই প্রকার কুকীর্তিতে মাদ্রাসার প্রতি ক্রমশ বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ছেন অবিভাবকরা ।।