প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৯ ফেব্রুয়ারী :
’সন্দেশখালীর মহিলাদের শুধু গণধর্ষনই করা হয়নি,তাদের বাংলাদেশে পাচার করে বিক্রিও করা হয়’। বৃহস্পতিবার সন্দেশখালীর ‘ত্রাস’ তৃণমূল নেতা শেখ সাহজাহান গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই এমন বিস্ফোরক দাবি করলেন বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আহলুওয়ালিয়া।একই সঙ্গে তিনি বলেন,’প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার বাংলায় আসছেন বলেই ভয়ে সাহজাহানকে ধরা হল।তবে সাহজাহান ধরা পড়লেও সন্দেশখালীতে মহিলাদের উপরে হওয়া অত্যাচারের ঘটনা সামনে আসায় গোটা বিশ্বের কাছে পশ্চিম বাংলার বদনাম হয়ে গেছে’।
লোকসভা ভোটের দিন ক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি
। তবে তার আগে থেকে শাসক বিরোধী, সকলেই
ভোট যুদ্ধের রণকৌশল তৈরির পরিকল্পা তৈরির কাছে নেমে পড়েছে।সেই মতই এদিন বর্ধমান- দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুরিন্দর সিং আহলুওয়ালিয়া পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে দলীয়ে কর্মসূচিতে যোগ দেন।সেখানেই আহলুওয়ালিয়া
সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সন্দেশখালী প্রসঙ্গ সামনে এনে এই রাজ্যের তৃণমূল সরকার ও পুলিশকে কার্যত তুলোধনা করেন।তিনি বলেন,
সন্দেশখালীতে মহিলাদের সঙ্গে যেসব ঘটনা ঘটেছে সেটা পশ্চিমবঙ্গের সভ্য সমাজের কাছে লজ্জার। রাজ্য সরকারের নাকের ডগায় ওইসব ঘটনা ঘটেছে। এর থেকে ঘৃণাকর কাজ আর কিছু হতে পারে না ।
সন্দেশখালী কাণ্ড নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শুধু এটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকেন বিজেপি সাংসদ
।তিনি বিস্ফোরক অভিযোগ এনে বলেন,
সন্দেশখালীতে মহিলাদের শুধু গণধর্ষণই করা হয়নি । মহিলাদের পাচার করে বাংলাদেশে বিক্রীও করা হয়। এসব নিয়ে যাঁরা কমপ্লেন করেছে তাঁদের কারুর মুণ্ডু কেটে নিয়েছে, কারুর হাত কেটে নিয়েছে আবার কারুর চোখ বার করে দিয়েছে।
২০১৪ সালে এমন সব ঘটনা সামনে আসার পর তদন্তকারী দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আমি সন্দেশখালী গিয়েছিলাম। তার পরেও একই ঘটনা চলতেই থাকে । আর পুলিশ শুধু নীরবই হয়ে থাকে। কিছুদিন আগেও সাহজাহান নির্দোষ বলে দাবি করে শাসক দলের লোকজন ওই এলাকায় পোস্টারও লাগিয়ে দেয় । তবে যেহেতু শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী বাংলায় আসছেন তাই সাজাহানকে আর রেহাই দেওয়া হল না । প্রধানমন্ত্রী আসার আগের দিনই সাজাহানকে গ্রেপ্তার করা হল ।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মত এস এস আহলুওয়ালিয়া এদিন বলেন,সেখ সাহজাহান এতদিন কোথায় ছিল সেটা পুলিশের প্রত্যেকেই জানতো। সন্দেশখালীর মহিলারাও দাবি করেছিলেন , সাজাহান সন্দেশখালীতেই আছে।। এদিন সাজাহানকে গ্রেপ্তার করা হল ঠিকই। তবে সারা বিশ্বের মানুষ বাংলার মহিলাদের দুরাবস্থার কথা জেনে যাওয়া বাংলার বদনাম হয়ে গেল।
কিন্তু আক্রান্ত হওয়ার পরেও ’ইডি’ সাহজাহানকে গ্রেপ্তার করতে পারলো না,সিবিআইও পারলো না,
এটা কি এই দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার ব্যর্থতা নয় ?
বিজেপি সাংসদ এস এস আহলুওয়ালিয়া সাফাই, না এটা ব্যর্থতা নেয়।কেন নয় , তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন,’সিবিআই বা ই ডি যখন কোন জায়গায় অভিযানে যায় তখন তাদের লোকাল পুলিশের মদত নিতে হয়। অথচ সেই পুলিশই চক্রান্ত করে ই ডির অভিযানের বিষয়ে সাজাহানকে খবর দিয়ে দিয়েছিল । তিনি দাবি করেন,’ই ডি অফিসারদের উপর হামলার ঘটনার পর পুলিশ সাজাহানের এজেন্টের কাজ করে।ওইদিন পুলিশই সাজাহানকে জলপথে বাংলা দেশের বর্ডার পার করে দেয়।’
একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের মজুরি অর্থ কেন্দ্রের সরকার উদ্দেশ্য প্রণদিত ভাবে আটকে রেখে দিয়েছে বলে তৃণমূলের নেতারা যে অভিযোগ করছে তা বিজেপি সাংসদ এস এস আহলুওয়ালিয়া মানতে চাননি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,১০০ দিনের কাজের টাকা চুরি হয়েছে বলে বাংলার সরকার’হিসাব’ দেয়নি । এছাড়াও বাংলায় বহু ভূয়া জবকার্ডেরও অস্তিত্ব মিলেছে।১০০ দিনের কাজের দুর্নীতি নিয়ে বলতে গিয়ে বিজেপি সাংসদ বিহারের ’চারা ঘোটালা’ প্রসঙ্গ
তুলে ধরেন । তিনি বলেন,চারা ঘোটালায় লালু প্রসাদ যাদবকে জেলে যেতে হয়েছিল।সেই রকমই এই রাজ্যেরও অনেক মন্ত্রীকেও জেলে যেতে হবে।।।