এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,২৫ ফেব্রুয়ারী : পয়লা জুলাই থেকে দেশে তিনটি নতুন ফৌজদারি আইন কার্যকর হতে চলেছে । ১৮৬০ সালে ব্রিটিশ আমলে প্রণীত ভারতীয় দণ্ডবিধিকে (IPC) ভারতীয় বিচারিক কোড দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে । নতুন এই আইন ভারতের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে রূপান্তরিত করবে । তিনটি নতুন ফৌজদারি আইন ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারি কার্যবিধি এবং সাক্ষ্য আইনকে প্রতিস্থাপন করবে। রাষ্ট্রপতির সম্মতির পর এই তিনটি বিল আইনে পরিণত হয়। এখন সেগুলো বাস্তবায়নের আজ রবিবার,২৪ ফেব্রুয়ারী, এজন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার ।
নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পর হত্যার ৩০২ ধারার পরিবর্তে ১০১ ধারা প্রয়োগ করা হবে। প্রতারণার জন্য ধারা ৪২০-এর পরিবর্তে ৩১৬ ধারা ব্যবহার করা হবে। খুনের চেষ্টার ক্ষেত্রে, ৩০৭ ধারাকে ১০৯ ধারায় প্রতিস্থাপিত হবে এবং ধর্ষণের ক্ষেত্রে ৩৭৬ কে ৬৩ ধারা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে । এছাড়া বিভাগের সংখ্যা ৫১১ থেকে ৩৫৬-এ নামিয়ে আনা হয়েছে। ১৭৫ টি বিভাগের পরিবর্তন করা হয়েছে। ৮ টি নতুন বিভাগ যুক্ত করা হয়েছে। ২২ টি বিভাগ অপসারণ করা হয়েছে ।
সিআরপিসির বিভাগের সংখ্যা ৫৩৩ থেকে কমিয়ে ৫২৪ করা হয়েছে। ১৬০ টি বিভাগ পরিবর্তন করা হয়েছে। ৯ টি নতুন বিভাগ যুক্ত করা হয়েছে। ৯ টি বিভাগ অপসারণ করা হয়েছে।
নতুন অপরাধ আইন থেকে যেসব বড় পরিবর্তন আসবে :-
১)একজন নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত যে কোন ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবেন৷
২)আগে ধর্ষণ ছিল ৩৭৫,৩৭৬ ধারা, এখন ৬৩,৬৯ ধারা হবে।
৩) খুনের জন্য ৩০২ ধারা ১০১ ধারা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে৷
৪)গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে একটি মেয়াদের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হবে যা ২০ বছর বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে৷
৫) মব লিঞ্চিংয়ে মৃত্যুদণ্ড।
৬)গাড়ির চাপায় কেউ আহত হলে চালক আহত ব্যক্তিকে থানায় বা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কম শাস্তি দেওয়া হবে।
৭)হিট অ্যান্ড রান মামলায় ১০ বছরের সাজা হবে৷
৮)আগে ছিনতাইয়ের আইন ছিল না, এখন আইন হয়ে গেছে।
৯)কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করলে পুলিশ তার পরিবারকে অবহিত করবে। আগে এর প্রয়োজন ছিল না।
১০)কোন ঘটনার ক্ষেত্রে ৯০ দিনের মধ্যে কি ঘটেছে,পুলিশ ভুক্তভোগীকে এই তথ্য দিতে বাধ্য হবে ।
১১)অভিযুক্ত যদি ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে হাজির না হয়, তাহলে তার অনুপস্থিতিতেই বিচার হবে।
১২)গুরুতর ক্ষেত্রে, একজন ব্যক্তি অর্ধেক সাজা ভোগ করার পরে মুক্তি পেতে পারে ।
১৩)ট্রায়াল কোর্টকে সর্বোচ্চ তিন বছরের মধ্যে তার সিদ্ধান্ত দিতে হবে।
১৪)মামলা শেষ হওয়ার পর, বিচারককে ৪৩ দিনের মধ্যে তার রায় দিতে হবে। রায় ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে সাজা ঘোষণা করতে হবে।
১৫)শুধুমাত্র দোষী ব্যক্তিই করুণার আবেদন করতে পারে ৷ এখনো পর্যন্ত এনজিও বা কোনো সংস্থা করুণার আবেদন করত।
সংসদে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ব্রিটিশদের তৈরি রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের পরিবর্তে এখন রাষ্ট্রদ্রোহ শব্দটি ব্যবহার করা হবে। এই আইনের মাধ্যমে নাগরিকদের অধিকারকে সর্বাগ্রে রাখা হবে এবং নারী ও শিশুদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে ।।