এইদিন ওয়েবডেক্স,কলকাতা,২২ ফেব্রুয়ারী : রিপাবলিক বাংলা সাংবাদিক সন্তু পানকে জামিন দেওয়ার সময় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ ফের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ শাহজাহানকে এখনো গ্রেফতার না করার জন্য রাজ্য সরকার ও রাজ্য পুলিশকে তিরস্কার করেছেন । শাহজাহানের গ্রেফতারের বিষয়ে বিশেষ আগ্রহ না দেখিয়ে একজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তারে পুলিশের অতি উৎসাহ দেখে বিচারপতি পরামর্শ দিয়েছেন যে ‘পুলিশ আধিকারিকরা নিজেদের কাজ যথাযথভাবে করুন’ । কিন্তু শাহজাহানের বিরুদ্ধে তীব্র জনরোষ এবং আদালতের বারবার তিরস্কার সত্ত্বেও পুলিশ কেন তাকে গ্রেপ্তারের আগ্রহ দেখাচ্ছে না এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জি বা ডিজি রাজীব কুমার শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে আগ্রহী নয় । কারণ শাহজাহানকে গ্রেফতার করলে ওরা ভোট করতে পারবে না ।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘এদিকে এর ফলশ্রুতি দেখতে পেয়েছেন আজকে । শাহজাহানের ভাই, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, শেখ সিরাজের জোর করে দখল করা জমিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে ক্ষিপ্ত জনতা ৷ যদি ওই পদ্ধতির আমি সমর্থন করি না । এটা স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ । যখন আইনের উপর মানুষের ভরসা উঠে যায় তখন মানুষ আইন নিজের হাতে নেয় । এটাকে আটকানো যাবে না ।
এই ধরনের ঘটনা হাওড়ার পাঁচলাতে ছড়িয়ে পড়েছে । ক্যানিং ও ফলতাতে মানুষ জোড় বাঁধছে । এরপরে বসিরহাটের গ্রামগুলিতে শাহানুরদের অত্যাচার, হিঙ্গলগঞ্জের গ্রামগুলোতে শেখ সাইদুলদের যে অত্যাচার, মানুষ ধীরে ধীরে সব জায়গাতে এভাবে জোট বাধবে । পুলিশি অত্যাচার, বিরোধীদের আটকানো, সংবাদ মাধ্যমের মুখ বন্ধ করেও তা আটকানো যাবে না।’
সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতাদের দ্বারা জবরদখল করে নেওয়া জমি জায়গাগুলি পুলিশের দ্বারা ফিরিয়ে দেওয়ার যে দাবি করা হচ্ছে, সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’পুলিশকে দয়া করতে হবে না । মানুষ নিজেই তাদের জমি জায়গা পুনরুদ্ধার করবে ।’ শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন সন্দেশখালি দুই ব্লকের ছয়টি দ্বীপ আছে, সবটাই মমতা ব্যানার্জি হাতের বাইরে চলে গেছে । ধামাখালি,রামপুর,সরবেড়িয়া,রাজবাড়ি,মালঞ্চ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় দলমত বর্ণধর্ম নির্বিশেষে এদের বিরুদ্ধে চলে গেছে ।’
অভিষেক ব্যানার্জির ‘জমিদার হটাও বাংলা বাঁচাও’ স্লোগান প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন,’উনি তো নিজেই জমিদার । দিন কয়েক আগে খড়দাতে শোভন দেব চ্যাটার্জির আচরণ দেখলেন না । কিভাবে প্রকাশ্য মঞ্চে একজন দলীয় নেতার মাইক্রোফোন কেড়ে নিলেন । কালীঘাটের আশেপাশে হরিশ মুখার্জী যারা থাকে তারাই তো পশ্চিমবাংলার জমিদার চালাচ্ছে ।’
‘খালিস্থানি’ ইস্যুতে শুভেন্দু বলেন,’এটা মমতা ব্যানার্জির তৈরি করা ।এটা নিয়ে কোন বিতর্ক নেই । কোথাও দেখাতে পারবে না আমি বা আমার সাথী নেতৃবৃন্দ এই ধরনের মন্তব্য করেছি । আমরা শিখ সম্প্রদায়কে যথেষ্ট সম্মান করি । এ নিয়ে মমতা ব্যানার্জি বলার কোন অধিকার নেই । কারণ ১৯৮৪ সালে, যখন হাজার হাজার শিখকে হত্যা করা হয়,সেই শিখ দাঙ্গার সময় মমতা ব্যানার্জি কংগ্রেসের পক্ষ নিয়েছিলেন । এরপর ২০২০ সালে একজন শিখ নিরাপত্তার রক্ষীকে, কিভাবে শিখদের গর্বের মাথার পাগড়ী খুলে চুল ধরে পুলিশ টানতে টানতে নিয়ে গিয়েছিল, সেটা সবাই জানে । অতএব এটা তৃণমূলের উসকানিতেই হচ্ছে ।’ তিনি বলেন,’আমি শিখদের সব উৎসবেই যাই,শিখ সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে । আমি শিখ সম্প্রদায়কে বলব, ভুল বুঝবেন না । এটা তৃণমূল ভুল বোঝাচ্ছে । আজ যিনি প্রেস কনফারেন্স করেছেন, তিনি তৃণমূলের নেতা ।’ পাশাপাশি তিনি জানান যে শিখ সম্প্রদায় এই বিষয় নিয়ে তাকে যখন যেখানে ডাকবে সেখানেই তিনি যাবেন এবং এই ঘটনার ব্যাখ্যা দেবেন ।।