শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),২১ ফেব্রুয়ারী : পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানার কুসুম গ্রামের দুই পাড়ার একটি মড়াই ও তিনটি খড়ের পালুইয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগগুলো অজ্ঞাত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে । আজ বুধবার সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তদন্তে যায় মন্তেশ্বর থানা পুলিশ । এদিকে অগ্নিকাণ্ডের জেরে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে ৪ জন কৃষককে । বোরো চাষের মরশুমে বিপুল অঙ্কের আর্থিত ক্ষতির ফলে বিপাকে পড়ে গেছে ওই পরিবারগুলি । ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দাবি দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে, পাশাপাশি সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মন্তেশ্বর ব্লকের কুসুম গ্রাম পঞ্চায়েতের কুসুমগ্রামের মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক সুমিত রেজের একটি ধানের মড়ায়ে রাতের অন্ধকারে কেউ বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয় । বাড়ির সামনে খামারে ছিল মাড়াইটি । সুমিত রেজের স্ত্রী ইন্দ্রানী রেজ বলেন,’আমার শাশুড়ির খুব ভোরে ওঠার অভ্যেস । প্রতিদিনের মতো এদিনও তিনি ভোর সাড়ে চারটা থেকে পৌনে পাঁচটার সময় ঘুম থেকে ওঠেন । তিনি খামারে গেলে তার নজরে পড়ে যে পালুইয়ের ছাউনির খড় পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে ছাই হয়ে গেছে । আর ভিতরের ধান তখনো লাল হয়ে জ্বলছে। এরপর তিনি চিৎকার করে লোকজন ডাকাডাকি করেন । তারপর আমি,আমার স্বামী এবং প্রতিবেশ কয়েকজন ছুটে এসে বালতি করর জল ঢেলে আগুন নেভাই ।’ সুমিত রেজে বলেন,’আমার মড়াইয়ে ১২৫ থেকে ৩০ বস্তা মতো ধান ছিল । ১ লক্ষ ৬০- ৭০ হাজার টাকার মত ক্ষতি হয়েছে আমার । আমার মড়াইয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে । কারণ কোনভাবেই মরায়ে আগুন লাগা সম্ভব নয় । মরাই থেকে রান্নাঘর বহু দূরে এবং আশেপাশে কোন বিদ্যুতের সংযোগও নেই । ঘটনাটা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে ।’
অন্যদিকে কুসুম গ্রামের সাঁই পাড়ায় বাসিন্দা বিমল সাঁই, তোতন বড়া ও এক মুসলিম ব্যক্তির পাশাপাশি ৪-৫ টি খড়েরে পালুই ছিল । আজ বুধবার ভোর রাত্রি দুটো নাগাদ ওই পালুইগুলি গুলি দাউ দাউ করে জ্বলতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা । তারপর স্থানীয়রা ছুটে এসে বালতি করে জল তুলে আগুন নেভায় । তার আগেই ভস্মীভূত হয়ে যায় পালুইগুলি। খবর পেয়ে আজ সকালে ঘটনাস্থলে তদন্তে আসে পুলিশ । তোতন বড়া, বিমল সাঁইদেরও অভিযোগ যে তাদের পালুইগুলিতে ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে । তবে কে বা কারা এবং কি উদ্দেশ্যে আগুন লাগিয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয় । স্থানীয়দের অনুমান এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে অজ্ঞাত দুষ্কৃতীবাহিনী । পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনা তদন্ত চলছে।।