জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,দক্ষিণ ২৪ পরগনা,১৯ ফেব্রুয়ারী : বিদ্যাসাগর, বিবেকানন্দ সম্পর্কে পড়তে গিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের দশম শ্রেণির ছাত্র দিলীপ কুমার বর্মনের অবচেতন মনে সমাজের জন্য কিছু একটা করার ইচ্ছে জাগ্রত হয়। কলেজ জীবনে বিবেকানন্দের প্রভাব তার সেই ইচ্ছেকে আরও বেশি করে বাড়িয়ে দেয়। কোনো একটি মোবাইল কোম্পানির এজেন্ট হিসাবে কাজ করার সময় বেশ কিছু অসহায় নেশাগ্রস্ত শিশুদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়। তার মন বিচলিত হয়ে ওঠে। অনাথ এইরকম ৪-৫ জন শিশুদের নিয়ে তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার হারু পয়েন্ট থানার অন্তর্গত খিরিশ তলায় ২০১২ সালে আরও পাঁচজন বন্ধুর সহযোগিতায় গড়ে তোলেন ‘সূর্যপুর আনন্দমন অনাথ আশ্রম’। আজ সেখানে আবাসিকদের সংখ্যা প্রায় ৪০ এর কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। সরকারি সাহায্য না পেলেও লোকের কাছে হাত পেতে আজও তারা চালিয়ে যাচ্ছেন এই আশ্রমটি।
রবিবার তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় হলদিয়ার ‘জনগণমন ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’। তারা আশ্রমের কর্ণধার দিলীপ বাবু সহ অন্যান্য সদস্যদের পাশে নিয়ে বাচ্চা সহ অন্যান্য আবাসিকদের হাতে তুলে দেয় ফলমূল, পেন, চকলেট এবং দ্বিপ্রাহরিক আহার। এগুলি পেয়ে প্রত্যেকেই খুব খুশি। সংস্থার কর্ণধার অরিন্দম দাস সহ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সুকোমল প্রধান, প্রশান্ত কুমার, অনুপ কুমার পাঁজা, শ্রাবন্তী গায়েন, মীনাক্ষী মাইতি, সেঁজুতি জানা, চিত্রা চ্যাটার্জ্জী, শমিতা রাউত, চিত্তরঞ্জন রাউত ও শুভঙ্কর সরকার। বিশেষভাবে সহযোগিতা করেন অর্পিতা বলিদা।
ট্রাস্টের প্রত্যেক সদস্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে দিলীপ বাবু বলেন – সরকারি সাহায্য ছাড়ায় লোকের কাছে হাত পেতে বহুকষ্ট করে আমরা এই আশ্রমটি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। মাঝে মাঝে কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও সহৃদয় ব্যক্তি আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান। সরকারের পক্ষ থেকে যদি আমাদের এই আশ্রমের জন্য একটি বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয় তাহলে খুব উপকার হয়।
অন্যদিকে অরিন্দম বাবু বললেন – এই আশ্রমটির কথা জানতে পেরে আমরা তাদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিই। এখানে এসে খুব ভাল লাগছে। ভবিষ্যতে আবার আসব। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন – এইধরনের একটি আশ্রম গড়ে তোলার জন্য দিলীপ বাবু ও তার সঙ্গীদের জন্য কোনো প্রশংসায় যথেষ্ট নয়।।