প্রিয় নিখিলেশ,
আজ কয়দিন ধরেই ভাবছি, তোমাকে পত্র লিখব। কিন্তু ওই যে সময় বড় বালাই। তবে আজ থেকে আর সময় আমাকে জব্দ করতে পারবে না। তা তুমি কেমন আছ ? নিশ্চয়ই ভালো। রূপ সাগরে তোমার মন নিহিত। জানো নিখিলেশ যেদিন থেকে তুমি আমার থেকে মুখ ফিরিয়েছ আমার পোষা ময়নাটা ও বলে ‘মর না পোড়া মুখি…’ ওকে দোষ দিই না । কারণ চারপাশে একটাই কলরব , ‘এমন হলে আমরা গলায় কলসি দড়ি দিতাম ‘… আচ্ছা নিখিলেশ বলতে পারো পুরুষ নারীর কাছে গেলে তখন দোষ নেই, অথচ কোন নারী পুরুষের কাছে গেলই….। নিখিলেশ আমি হাসলে আজ আর শিউলি ঝরে পড়ে না শরৎ কাননে কারণ আমি আজ জারজ সন্তানের মা। নিখিলেশ তোমার চুম্বন, আলিঙ্গন আজও স্মৃতিপটে অক্ষত , সবই আছে কিন্তু নেই শুধু তুমি আর তোমার ছায়া। নিখিলেশ হয়ত আর কয়েক মুহূর্ত বাকী এ জীবন শেষ করতে। যদি বুঝতাম যে যৌবন এর মত্ততা শেষ হলে জীবন নিঃস্ব হবে তাহলে পাথর হয়ে জন্মাবার আকাক্ষ্মা রাখতাম এই মূল্যবান মানব জনমে। ওও আমি ত মানবী , তাদের তো আবার অধিকার নেই মূল্যবান হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার, হ্যাঁ একটা অধিকার আছে মূল্যবান বস্তু হিসাবে ব্যবহৃত হবার। ধন্য , ধন্য সমাজ । কালের পর কাল এই মানবী হিসাবে নিজেকে মেলে দিয়ে সর্বদা তীর্যক মন্তব্যের শিকারে বাধ্য হতে হয় সহস্র মানবীদের । নিখিলেশ শেষে এটুকুই বলব, নারী ফুল এর ন্যায় কোমল ও সুন্দর। তার সুন্দর মনটাকে ভালোবেসো, শরীরটাকে নয় । তোমরাই একমাত্র পারবে নিখিলেশ আমাদের মত মানবীদের রক্ষা করতে। তাই একটু এগিয়ে এসো , তাহলে দেখবে আমার মত আর কাউকে বিষ পান করে , পালিয়ে জীবন থেকে ছুটি নিতে হবেনা। বাড়িয়ে দাও তোমাদের হাত নিখিলেশ। ভালো থেকো নিখিলেশ। আর পারছি না শ্বাস নি……
তোমার প্রিয়তমা (সংযোজন)
বি. দ্র : লেখিকা মারা গেছেন, তোমার প্রিয়তমা শব্দ দুটি লেখার আগেই।