জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),১৬ ফেব্রুয়ারী : সার, আলুর বীজ, কীটনাশক ইত্যাদির দাম নিয়মিত বেড়েই চলেছে। ফলে দিনের পর দিন আলু চাষের খরচ বেড়েই চলেছে। উৎপাদিত ফসলের সঠিক দাম না পাওয়ায় চাষের খরচ উঠছে না। ফলে প্রায় প্রতিবছর বিপুল ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে চাষীদের। এদিকে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারগুলোর পক্ষ থেকে তৈরি হয়নি সঠিক কৃষিনীতি।
চলতি বছরও বিপুল খরচ করে আলু চাষ করে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলকোট ও আউশগ্রামের চাষীরা। আলুর বীজ বপনের কিছুদিন পরেই বৃষ্টিতে ভেসে যায় চাষের জমি। এলাকার চাষীদের কাছে অন্যতম অর্থকরী ফসল হল আলু। তাই বাধ্য হয়ে তাদের একটা বড় অংশ অতিরিক্ত খরচ করে দ্বিতীয়বার আলুর বীজ বপন করে। কিন্তু মনের মধ্যে আশঙ্কা ছিল – দেরিতে ফলন হবেতো! ঠান্ডা থাকবে তো! যদিও প্রবল ঠান্ডার জন্য সেই আশঙ্কা কিছুটা হলেও দূর হয়।
তারা জানতনা তাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে আর এক ভয়ংকর পরিস্থিতি। প্রায়শই আকাশ মেঘলা থাকছে। সঙ্গে মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি। এর হাত ধরে আবির্ভাব ঘটেছে আলুর চরম শত্রু ‘ধসা’। এই আবহাওয়া ‘ধসা’-র পক্ষে খুবই অনুকূল হলেও আলু গাছের পক্ষে বিপজ্জনক। বিঘার পর বিঘা জমিতে লেগেছে ‘ধসা’। আলু গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গাছ বাঁচানোর জন্য চাষীরা মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নিয়মিত স্প্রে করে যাচ্ছে। তবুও তাদের মনে আশঙ্কা – এতে গাছ কি বাঁচবে! শেষপর্যন্ত ফলন হবে তো!
কথা হচ্ছিল বিশিষ্ট কৃষি বিজ্ঞানী ডঃ নাদিরা চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বললেন,’আবহাওয়ার উপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকলেও আলু চাষের আগেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রথমে আলু জমিকে ক্ষতিকর জীবাণু থেকে মুক্ত করতে হবে। অধিকাংশ সময় ‘সেকেণ্ড কাট’ আলুর বীজ ব্যবহার করা হয়। সেগুলি মূলত রোগাক্রান্ত থাকে। বসানোর আগে সেগুলো ঠিকমত শোধন করতে হবে। এখন ‘ধসা’ যখন শুরু হয়েছে পাশাপাশি সমস্ত চাষীদের স্প্রে করতে হবে। তবেই হয়তো কিছুটা রেহাই পাওয়া যেতে পারে।’
মঙ্গলকোটের আলুচাষী দেবাশীষ মণ্ডল বলেন,’যেহারে ধসা লেগেছে তাতে আলু উৎপাদন কম হবে এবং চাষের খরচ উঠবে বলে মনে হচ্ছেনা। প্রতিবছর চাষীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে সদর্থক পদক্ষেপ না নিলে হয়তো চাষীরা আগামী দিনে চাষ করতে উৎসাহ হারাবে।’।