এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,০১ জুন : “যাদুটোনা” করার অভিযোগ তুলে এক গৃহবধুর উপর হাঁসুয়া নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল প্রতিবেশী পরিবারের বিরুদ্ধে । বধুকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হল তাঁর দুই নবালিকা মেয়ে ৷ সোমবার সন্ধ্যায় সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মালদার মোথাবাড়ি থানার রামনাথপুরে । পরিবারের লোকজন অর্চনা মণ্ডল নামে ওই গৃহবধু ও তাঁর দুই মেয়ে সুইটি মণ্ডল ও সন্ধ্যা মণ্ডলকে উদ্ধার করে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে । কিন্তু অর্চনাদেবীর অবস্থার অবনতি হলে এদিন মঙ্গলবার ভোরে তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয় । তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, রামনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা অর্চনা মণ্ডলের দুই মেয়ে সুইটি ও সন্ধ্যা ভাগীরথী উচ্চ বিদ্যালয়ে যথাক্রমে দশম ও ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াশোনা করে । সোমবার বিকেলে দুই বোন স্থানীয় এক গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছিল । সন্ধ্যা নাগাদ মেয়েদের আনতে গিয়েছিলেন অর্চনাদেবী । অভিযোগ, অর্চনাদেবী মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে শংকর দাসের আমবাগানের কাছাকাছি আসতেই প্রতিবেশী ভোলা ঘোষ, রতন মন্ডলরা দলবল নিয়ে তাদের পথ আটকায় । তারপর তারা অর্চনাদেবীকে হাঁসুয়া দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে । দুই কিশোরী মেয়ে তাদের মা’কে বাঁচাতে গেলে তাদেরও কোপানো হয় বলে অভিযোগ । এদিকে মা ও দুই মেয়ের আর্ত চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসে । এরপর তিনজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । এদিকে ঘটনার পর থেকেই চম্পট দেয় হামলাকারীরা ।
আক্রান্ত গৃহবধুর মেয়ে আহত সুইটি মণ্ডল বলে, ‘হামলাকারী রতন মণ্ডলের এক ভাই প্রায়ই অসুস্থ হয় । এই কারনে আমার মা’কে দোষারোপ করত রতনরা ৷ ওদের অভিযোগ, আমার মা নাকি “যাদুটোনা” করে । তন্ত্রমন্ত্র প্রয়োগ করেই নাকি রতনের ভাইকে “গুণ” করেছে আমার মা । এনিয়ে কিছুদিন আগে গ্রামে সালিশিসভাও বসেছিল । কিন্তু কোনও মিমাংসা হয়নি । এরপর সোমবার সন্ধ্যায় ওই অভিযোগ তুলে ওরা হাঁসুয়া নিয়ে আমার মায়ের উপর হামলা চালায় । আমরা দুই বোন বাঁচাতে গেলে আমাদের উপরেও আক্রমণ করে ।’ পাশাপাশি সুইটির অভিযোগ, ‘রতনরা আমাদের একটা জমির বেশ কিছুটা অংশ দখল করে নিয়েছে । আমদের পরিবারের লোকজন এনিয়ে প্রতিবাদ করলে ওরা আমার মা’কে নিয়ে ওই সমস্ত অপপ্রচার করতে শুরু করে ।’
এদিকে খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে তদন্তে আসে মোথাবাড়ি থানার পুলিশ । প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে আক্রান্ত ও অভিযুক্তের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল । সেই আক্রোশেই এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে । পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা পলাতক । তাদের সন্ধান চালানো হচ্ছে ।।