সেখ মিলন,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১২ ফেব্রুয়ারী : স্কুলে শৌচাগার থেকেও নাই,মিডডে মিলের খাবারের মান খুবই খারাপ,স্কুলের অফিসেই ধুমপান করেন প্রধান শিক্ষক – এই সমস্ত অভিযোগ তুলে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের রায়রামচন্দ্রপুর উন্নত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকরা । সেই সময় অভিভাবকদের সঙ্গে দূর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে । আজ সোমবার দুপুরের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ভাতার থানার পুলিশ । শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে । অভিযোগ প্রসঙ্গে ভাতার পশ্চিম চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক পিয়ালী শীল বলেছেন,’বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার পর উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হবে।’
গ্রামবাসীদের অভিযোগ যে রায়রামচন্দ্রপুর উন্নত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শৌচাগার রয়েছে । কিন্তু শৌচাগারে সারাক্ষণ তালা লাগিয়ে রেখে দেওয়া হয় । ফলে অধিকাংশ সময় বাড়িতে শৌচকর্ম সারতে যেতে হয় পড়ুয়াদের । স্কুলের শৌচাগারের তালা খোলা থাকলেও জলের ব্যবস্থা না থাকায় পড়ুয়াদের ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় । শিশুদের বালতি করে জল বহন করতে হয় শৌচকর্ম সারার জন্য । জনৈক পড়ুয়ার মা সুজাতা ঘোষের অভিযোগ, ‘শুধু শৌচাগারই নয়,স্কুলের মিডডে মিলের মান অত্যন্ত নিম্নমানের । এ নিয়ে প্রধান শিক্ষককে বলতে গেলেই তিনি রেগে গিয়ে আমাদের শিশুদের অন্য স্কুলে ভর্তি করার পরামর্শ দেন ।’ তার আরো অভিযোগ যে প্রধান শিক্ষক স্কুলের অফিস রুমের মধ্যেই ধূমপান করেন । প্রায়ই পড়ুয়াদের নজরে পড়ে । স্কুলের মধ্যে প্রধান শিক্ষককের ধূমপানের একটি দৃশ্যের ভিডিও একবার স্থানীয় এলাকায় মোবাইলে ভাইরালও হয়েছিল বলে তিনি জানান ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রায়রামচন্দ্রপুর উন্নত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৬৫ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে । দু’জন শিক্ষক রয়েছেন । স্কুলের নিজস্ব মোটর পাম্প রয়েছে । কিন্তু শৌচাগারটি স্কুলের মূল ভবন থেকে কিছুটা দূরে । পারতপক্ষে সেটিতে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয় । শৌচকর্ম সারতে হলে পড়ুয়াদের প্রথমে প্রধান শিক্ষককে জানাতে হয়, তারপর শৌচাগারের তালা খোলা হয়। এছাড়া পাইপলাইন করে শৌচাগারে জলের সংযোগ করা হয়নি । যে কারণে শৌচকর্ম সারতে গেলে বালটিতে জল ভরে শৌচাগারে যেতে হয় কচিকাঁচাদের । এই সমস্ত সমস্যার কারণে অভিভাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ছিল দীর্ঘদিন ধরে । আজ তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে । যদিও স্কুলের অফিসে ধুমপান করা, নিম্নমানের মিড ডে মিলের অভিযোগ এবং শৌচাগারের জন্য পড়ুয়াদের সমস্যা কথা খারিজ করে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক তারিকুল ইসলাম । কার কথায়, ‘সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী মিডডে মিল দেওয়া হয় । আর পড়ুয়াদের শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন হলেই তালা খুলে দেয়া হয়, তাই কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয় ।’ কিন্তু স্কুল চলাকালীন কেন শৌচাগারে তালা লাগিয়ে রাখা হয় ? এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসীরা ।।