এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৯ ফেব্রুয়ারী : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-এর সেক্স র্যাকেটগুলি মূর্তিমান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের পুলিশের কাছে । মেয়ের নাম ও সুন্দরী মেয়ের ছবি দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে ‘হনি ট্রাপে’ ফেলে ব্ল্যাকমেইলিং করে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্রগুলি । তবে লাগাতার সরকারী প্রচারের পর এখন ভারতের সাধারণত মানুষ ওই সমস্ত প্রতারকদের বিষয়ে অনেক সচেতন হয়ে গেছে । সেকারণে ওই অসাধু চক্রগুলির নিজের দেশে তেমন রোজকার হচ্ছে না । তাই তারা এখন হাত বাড়িয়েছে প্রতিবেশী ইসলামি রাষ্ট্র বাংলাদেশের দিকে । ভারতের সুন্দরী মেয়ের ছবিতে আকর্ষিত হয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলতে গিয়ে নিজেরাই ‘হনি ট্রাপে’ পড়ে সর্বসান্ত হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশি জিহাদিরা । এই ’হানি ট্রাপে’ পড়ে লাখ লাখ টাকা খুইয়েছেন বাংলাদেশি চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আমলাসহ ধনী ব্যবসায়ীরা । ভারতের এমনই একটি চক্রের চার বাংলাদেশি সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের পুলিশ। ধৃতরা কবুল করেছে যে ভারতের সুন্দরী মেয়েদের যেসমস্ত ছবি দেখে বাংলাদেশিরা বন্ধুত্ব করেছিল, ওই সমস্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টগুলি আদপে পুরুষরাই নিয়ন্ত্রণ করে ।
ভারতের এক ব্যক্তির সঙ্গে বাংলাদেশি একে যুবকের কথোপকথনের রেকর্ডিং প্রকাশ্যে এসেছে । কথোপকথন মূলত আর্থিক বিষয় নিয়ে । সবশেষ কত টাকা কীভাবে পাঠানো হয়েছে সেই তথ্য ফাঁদে পড়া বাংলাদেশি দিচ্ছে ফোনে। ভারতের প্রতারক চক্র তা মিলিয়ে নিচ্ছেন । তবে এই টাকার উৎস যেমন অবৈধ একইভাবে টাকা পাঠানোর চ্যানেলও বৈধ নয়।
বাংলাদেশের ওই যুবক জানিয়েছে যে ফেসবুকে ভারতের নাগরিকের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয় । হোয়াটস অ্যাপ নম্বর আদান প্রদান । তারপর আসে ভিডিও কলের আহ্বান । ভারতের সুন্দরী তরুনী বন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভিডিও কলে শুরু হয় আলাপচারিতা । উভয়েই নগ্ন হয়ে ক্যামেরার সামনে আসে । হঠাৎ একদিন ওই বন্ধুর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে আসে সেই অশ্লীল ভিডিও যা কথোপকথনের মাঝেই গোপনে রেকর্ড করে রেখেছিল প্রতারক । সেটা টেরও পায়নি বাংলাদেশি বন্ধু। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেইলিং ।
মিডিয়া রিপোর্টে জানা গেছে,বিগত কয়েক মাসে এই সংক্রান্ত একাধিক মামলা এবং অভিযোগ পায় বাংলাদেশ জুড়ে বিভিন্ন থানার পুলিশ। ভুক্তভোগীরা কেউ চিকিৎসক, কেউ প্রকৌশলী, কেউ আমলা এবং ব্যবসায়ী। তালিকায় আছেন বাংলাদেশি সাংবাদিকরাও । তদন্ত করতে গিয়ে ভারতীয় চক্রটি শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ। বাংলাদেশে বসে যারা সহযোগিতা করে আসছিলেন তাদেরকেও করা হয় শনাক্ত। গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ কমিশনার মশিউর রহমান বলছেন, ভারতের চেন্নাই, মাদ্রাজ, রাজস্থান, দিল্লী এবং বিহারের কয়েকটি প্রতারক চক্র মেয়েদের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতো। মেয়ে ভেবে বন্ধুত্বের সাড়া দিতে গিয়েই ঘটে সর্বনাশ। ইজ্জত বাঁচাতে লাখ লাখ টাকা ভুক্তভোগীরা তুলে দিয়েছেন প্রতারকদের হাতে। সেই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে চলে গেছে ভারতে ।।