জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),০৮ ফেব্রুয়ারী : সারাদিনের কঠোর পরিশ্রমের পর গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন মঙ্গলকোটের গণপুর গ্রামের ‘হাজরা’ বাড়ির অন্যতম সদস্য মেঘলাল হাজরা স্বপ্ন দেখেন মা মনসা তাকে পুজো করার নির্দেশ দিচ্ছেন। সেটা ছিল দশহারার দিন। মায়ের নির্দেশ মেনে সেই রাতেই বাড়ির উঠানে মনসার ডাল পুঁতে, তালপাতার ছাউনি করে টিমটিম করে পুজো শুরু করেন মেঘলাল হাজরা। আর্থিক কারণে গরীব মেঘলালের পক্ষে এর বেশি কিছু করা সম্ভব ছিলনা। একমাত্র সামর্থ্য ছিল ভক্তি ও মায়ের প্রতি অগাধ বিশ্বাস।
তারপর দেখতে দেখতে শতাধিক বছর পেরিয়ে গেছে। আজও ভক্তি ও বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরে ‘হাজরা’ বাড়ির সদস্যরা মনসা মায়ের পুজো করে চলেছে। ধীরে ধীরে তাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তালপাতার ছাউনির পরিবর্তে হয়েছে মায়ের মন্দির। ‘হাজরা’ বাড়ির বিশ্বাস এই সবকিছু মায়ের কৃপায় হয়েছে। এতকথা বলতে বলতে হাঁপিয়ে উঠলেন ৯২ বছরের বৃদ্ধ খেলারাম হাজরা।
পরিবারের অন্যতম সদস্য প্রবীণ রামপ্রসাদ হাজরা বললেন,দশহারার দিন যে মনসার ডাল পোঁতা হয় নবমীতে তার বিসর্জন করা হয়। মাঘ মাসের চতুর্দশীতে দু’দিন ব্যাপী এই পুজো হয়। তিনি আরও বললেন – মায়ের পুজোর সময় যে যজ্ঞ হয় তার কলা খেয়ে অনেক সন্তানহীনা নারী সন্তানবতী হয়েছেন।
কর্ম বা পড়াশোনার সূত্রে যে যেখানেই থাকুক পুজোর দিন প্রত্যেকেই বাড়ি ফিরে আসে। তাইতো দয়াল, জীবন, বর্ণা, পল্লবী, বুদ্ধদেব, সৌম্যদীপদের পাশাপাশি ঐন্দ্রিলা, শ্রীজাদের আনন্দ করতে দেখা যায়।’হাজরা’ বাড়ির প্রবীণদের বিশ্বাস বর্তমান প্রজন্ম আগামী দিনেও পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখবে।।