এইদিন ওয়েবডেস্ক,উত্তর ২৪ পরগনা,০৮ ফেব্রুয়ারী : রোহিঙ্গা বাহিনীদের দিয়ে ইডির আধিকারিকদের পেটানোর পর গ্রেফতারের ভয়ে আত্মগোপন করেছে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান । বিগত ৩৩ দিন ধরেও শাহজাহানের কোন হদিস করতে পারেনি ইডি । এদিকে সন্দেশখালিতে তৃণমূলের প্রতি গণরোষ দেখল রাজ্যবাসী । তৃণমূল কর্মীদের বেতন পেটানোর থেকে শুরু করে এক তৃণমূল কর্মীর পোল্ট্রি ফার্মে আগুন লেগে লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে । বুধবার প্রায় রাতভর এনিয়ে উত্তপ্ত ছিল সন্দেশখালি ।
কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে কথিত বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বুধবার সন্দেশখালিতে বাইক মিছিল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস । সন্দেশখালি-২ ব্লকের ত্রিমোহিনী থেকে কাহারপাড়া, দাসপাড়া, পাত্রপাড়া-সহ একাধিক গ্রামে তৃণমূলের এই মিছিল বের হয়েছিল । তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা মিছিল করেছিল গ্রামবাসীরা । গ্রামবাসী এবং তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের মিছিল মুখোমুখি হলে তুমুল সংঘর্ষ বেধে যায় । গ্রামবাসীদের মূলত অভিযোগ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ উত্তম সর্দার ও শিবু হাজরার বিরুদ্ধে । তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অভিযোগ যে তারা সাধারণ মানুষের মাছের বিঘার পর বিঘা ভেড়ি ও জমি জবরদখল করে নিয়েছে । এই অভিযোগ তুলে ক্ষিপ্ত জনতা শিবু হাজরার পোল্ট্রি ফার্মে আগুন ধরিয়ে দেয় । পাশাপাশি লাঠি সোঁটা দিয়ে তৃণমূল কর্মীদের বেদম পেটায় আদিবাসীরা । পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে ভীত তৃণমূল কংগ্রেস কংগ্রেস কর্মীদের নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ বাঁচাতে হয় । গ্রামবাসীদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত নৌকায় চেপে পালাতে হয় তৃণমূল কর্মীদের ।
এই ঘটনায় বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে শাসক দল । শাসক দলের অভিযোগ যে বিজেপিই গ্রামবাসীদের উসকে দিয়েছে । পাল্টা বিজেপি দাবি করেছে যে শেখ শাহজাহানের অত্যাচারের বিরুদ্ধে এটা সন্দেশখালির মানুষের গণরোষের বহিঃপ্রকাশ। দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘সন্দেশখালিতে তৃণমূল দুষ্কৃতীদের হটিয়ে দিল ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ। জ্বালিয়ে দেওয়া হল আগুন। এই আগুন রাগের আগুন, ক্ষোভের আগুন, দিনের পর দিন অত্যাচারিত হওয়ার প্রতিবাদের আগুন। এর আগেও চাষের জমি কেড়ে গায়ের জোড়ে ভেরি বানিয়ে রোজগার করত পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের তৃণমূল গুণ্ডা নান্টু প্রধান। তাকেও গ্রামের লোকেরা মিলে পিটিয়ে মারে সন্দেশখালির মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত জন আন্দোলনকে স্বাগত জানাই ।’
পাশাপাশি সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘সন্দেশখালি দেখে শাসকের বোঝা উচিত, জনরোষ কতো ভয়াবহ। এটা শুধু সন্দেশখালি নয় গোটা রাজ্য জুড়েই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’।