এইদিন ওয়েবডেস্ক,নোয়াখালী, ০৭ ফেব্রুয়ারী : রাতের অন্ধকারে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে ২৯ বছর বয়সী এক গৃহবধূ ও তার ১৩ বছরের কিশোরী কন্যাকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের একটা গ্রামে । এই গণধর্ষণের ঘটনার মাস্টারমাইন্ড স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বার । মঙ্গলবার ভোর রাত দুটো নাগাট এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর ওইদিনই দুপুরে আবুল খায়রকে জেলা শহর মাইজদী থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চর কাজী মোখলেছ গ্রামের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের আবুল খায়ের আবুল খায়ের চর ওয়াপদা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ রয়েছে । নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গণধর্ষণের ঘটনায় আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বার নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । বাকি দুজন পলাতক । তাদের সন্ধান চলছে ।’ পাশাপাশি মহিলা তার কিশোরী মেয়েকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি ।
জানা গেছে যে নির্যাতিতা মহিলার স্বামী জন্মজুরির কাজ করেন । কর্মসূত্রে তাকে বাইরে থাকতে হয় । তিন চার দিন অন্তর তিনি বাড়ি ফেরেন । সোমবার রাতে বাড়িতে ছিলেন না মহিলার স্বামী । সেই সুযোগে গভীর রাতে সিঁধ কেটে মহিলাদের ঘরে ঢুকে পড়ে আবুল খায়ের ও তার তিন সঙ্গী । তারা মহিলা ও তার কিশোরী কন্যাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে । নির্যাতিতা মহিলা বলেছেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ দুজনকে চিনতে পারলেও আরেকজনকে তিনি চিনতে পরেননি ।’ নির্যাতিতার স্বামী বলেন, ‘আবুল খায়ের কিছুদিন আগে তার স্ত্রীকে পোড়া মোরগ খাওয়ানোর প্রস্তাব দেয়। আমার স্ত্রী ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মুন্সী মেম্বার আমার স্ত্রী মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে ফোনে তাকে উত্যক্ত করত। পরে মোবাইল নম্বর বদল করে দিলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এসব ঘটনার জের ধরে সে লোকজন সাথে নিয়ে নিয়ে গিয়ে এই ঘটনা ঘটায়।’
প্রসঙ্গত,বাংলাদেশের ধর্ষণ বা গণধর্ষণের ঘটনা নতুন কিছু নয় । মাদ্রাসার ছোট ছোট পড়ুয়ারা আকছাড় শিক্ষকদের যৌন নিপীড়নের শিকার হয় । এছাড়া প্রায় দিনই অপহরণ করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে থাকে । ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের দিন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় এক গৃহবধূকে গনধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ঘিরে দেশব্যাপী আলোড়নের সৃষ্টি হয় । ওই ঘটনায় ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । তার মধ্যে ১০ জনকে গত সোমবার ফাঁসির সাজা দিয়েছে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস । বাকি ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সাজা ঘোষণা করা হয়েছে ।।