জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জ,আউশগ্রাম,০৫ ফেব্রুয়ারী : পৌষ-মাঘ শীতকাল। শীতের আমেজ গায়ে মেখে আট থেকে আশি – সবাই মেতে ওঠে পিকনিকে। কর্মব্যস্ত একঘেয়েমি জীবনে অন্তত একদিনের জন্য আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়। এরজন্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত তো পিকনিক স্পট হিসাবে সুপরিচিত হয়ে উঠেছে। কোথাও বন্ধুরা দলবেঁধে কোথাও বা পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে পিকনিক করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পিকনিক মানেই হইহুল্লোর, খাওয়া দাওয়া, হৈচৈ ইত্যাদি। সবই পরিচিত দৃশ্য। কিন্তু এর বাইরেও যে অন্যধারার পিকনিক হতে পারে গত কয়েক বছর ধরে তার সাক্ষী থাকার সুযোগ পাচ্ছেন আউশগ্রামের দ্বারিয়াপুরের বাসিন্দারা। সৌজন্যে শিক্ষক ভৈরব চট্টোপাধ্যায়। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সঞ্জীব মুখার্জ্জী।
রবিবার( ৪ ফেব্রুয়ারী) দ্বারিয়াপুর সংলগ্ন জঙ্গলে আয়োজিত হয় এই পিকনিকের। পরিচিত দৃশ্যের বাইরে এর অন্যতম অঙ্গ হিসাবে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রবীণদের সম্বর্ধনা ও গীতাপাঠ। পিকনিকে শান্তিময় মুখার্জ্জী, মাণিকেশ্বর বাউড়ি, লক্ষী সেন, শিবপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য, মণ্টি চ্যাটার্জ্জী প্রমুখ পাঁচজন প্রবীণ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। তাদের গলায় পড়িয়ে দেওয়া হয় উত্তরীয় ও হাতে তুলে দেওয়া হয় গীতা। এদের প্রত্যেকের বয়স আশী বছর অতিক্রম করে গেলেও অনুষ্ঠানে এদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত। এদের জন্য পরিবারের সদস্যরা চিন্তিত হলেও এরা কিন্তু থেমে থাকেননি। বয়সের বাধা অতিক্রম করে সবার সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন। এদের পাশে পেয়ে অন্যরাও খুব খুশি।
নিভা চ্যাটার্জ্জী ও হিয়া সুয়াসায়ারিয়ার গীতাপাঠ পিকনিক স্থলে একটা ভাবগম্ভীর পরিবেশের সৃষ্টি করে। মুহূর্তের মধ্যে সেখানে একটা ধরনের ভাবনার সৃষ্টি হয়।অনুষ্কা রায় ও দেবার্ঘ্য মুখার্জী অংশগ্রহণ করে অঙ্কনে। ঋদ্ধি মুখার্জ্জীর সঙ্গীত এবং বৃষ্টি চ্যাটার্জ্জী ও রাখী চ্যাটার্জ্জী পরিবেশিত কবিতা উপস্থিত ব্যক্তিদের মুগ্ধ করে। সবমিলিয়ে এক আনন্দ মুখর দিন যাপনের সুযোগ পান ১৩০ জন ব্যক্তি। দিনের শেষে প্রত্যেকেই খুব খুশি।
পিকনিকে বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মলয় মুখোপাধ্যায়, ‘আমার কুটির’ সোসাইটির প্রধান প্রশান্ত ঘোষ, বিশিষ্ট সমাজসেবী পবন সুয়াসায়ারিয়া, দীগনগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সবিতা মাহাতো সহ আরও অনেকেই।ভৈরব বাবু বললেন,’বছরের বিভিন্ন সময় আমরা সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত থাকি। মিলিত হয়ে সেভাবে আনন্দ করার সুযোগ পাইনা। তাই নবীন-প্রবীণ সবাই মিলে আনন্দ করার জন্য প্রতিবছর এই পিকনিকের আয়োজন করে থাকি।’ অন্যদিকে সঞ্জীববাবু বললেন, ‘পিকনিকে ছিলেন আট থেকে আশি – সবাই খুব খুশি। বিজ্ঞাপনের ভাষায় বলা যেতে পারে এই আনন্দের ভাগ হয়না ।’।