শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),০৪ ফেব্রুয়ারী : দীর্ঘ আন্দোলনের পর অবশেষে বাঁকা নদীর ওপর পাকা সেতু পেতে চলেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বরের বাসিন্দারা । মন্তেশ্বরের গাব্রুপুর থেকে মেমারি-২ নম্বর ব্লকে সোঁতলা গ্রামের মাঝেই পড়ছে বাঁকা নদী । এতদিন ছোট নৌকায় নদী পারাপার করতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেউ অসুস্থ হলে তাকে খাটিয়ায় চাপিয়ে নদী পার করানো হত । ফলে এক দিকে যেমন সময় বেশি লাগতো, অন্যদিকে তেমনি প্রাণ হাতে করে নদী পারাপার করতে হতো রোগীর পরিজনকে । পরবর্তীকালে একটি বাঁশের সেতু তৈরি হলেও বর্ষাকালে ওই অস্থায়ী সেতু দিয়ে যাতায়াত অত্যন্ত বিপজ্জনক ছিল । পাকা সেতুর দাবিতে ইতিমধ্যে বহুবার পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ, সরকারী দফতর ঘেরাও,বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন নিবেদন করেও কোন সূরাহা হয়নি । অবশেষে বাসিন্দাদের দাবি অনুযায়ী নদীর ওপর পাকা সেতু নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে । এখন শুধু সেতু উদ্বোধনের প্রতীক্ষা । দীর্ঘদিনের দাবী মিটতে চলায় চরম খুশি এলাকার বাসিন্দারা ।
প্রসঙ্গত,কালনায় রয়েছে আদালত,হাসপাতাল,স্কুল কলেজ ও বিভিন্ন অফিস কাছারি । কালনা মহকুমার অন্তর্গত মন্তেশ্বর ব্লকের প্রায় ৩০ টি গ্রামের বাসিন্দাদের বাঁকা নদী পেরিয়ে কানলায় যেতে হতো । স্থানীয় গ্রামবাসী হাজু গোপাল বিশ্বাস, তাপস বিশ্বাসরা বলেন, আমাদের গ্রামগুলো খুবই অনুন্নত । নৌকাই ছিল আমাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা । বিকল্প একটি রাস্তা দিয়ে কালনা যাওয়া যায়,তবে সেই রাস্তায় যেতে গেলে আমাদের ৩০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হতো । যে কারণে আমাদের এলাকার কুড়ি পঁচিশটি গ্রামের মানুষ চূড়ান্ত নাকাল হতো । বিকল্প রাস্তাটির দূরত্ব এত বেশি হওয়ায় মানুষ নৌকায় চড়ে যাতায়াত করতে বেশি পছন্দ করত । কয়েকবার নৌকাডুবির ঘটনাও ঘটেছে ।’ তারা আরও বলেন,’বেশ কয়েক বছর আগে আমরা একটা অস্থায়ী সেতু তৈরি করেছিলাম । সেতুটি প্রায় তিন বছর মত চলেছিল । তারপর দীর্ঘ কুড়ি-পঁচিশ বছর ধরে আমরা পাকা সেতুর জন্য তদ্বির করি । এখন পাকা সেতু হয়ে যাওয়ায় মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে ।’
দেখুন ভিডিও 👇
মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আহমাদ হোসেন বলেন,’পাকা সেতু না থাকায় বেশ গ্রামের মানুষকে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে নাকাল হতে হয়েছে । সব থেকে সমস্যায় পড়তে হতো হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়ার সময় । পাকা সেতু তৈরি হয়ে যাওয়ায় এলাকার মানুষের খুবই সুবিধা হবে ।’ তিনি জানান যে সেতুতে যাতায়াতের জন্য একটি রাস্তার নির্মাণ হচ্ছে । সেই রাস্তা নির্মাণের কাজ শেষ হলে সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে ।
জানা গেছে,সেতু নির্মাণের ফলে কালনা থেকে মন্তেশ্বর পৌঁছানোর দূরত্ব কমবে প্রায় ১৮ থেকে ২০ কিলোমিটার। যদিও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে ইতিমধ্যেই সেতু দিয়ে ছোট যান চলাচলে শুরু হয়ে গেছে ।।