এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাবনগর,০৪ ফেব্রুয়ারী : রাজস্থানের দর্জি কানহাইয়ালালকে জবাই করে হত্যাকান্ডের মত ঘটনা ঘটানোর প্রচেষ্টা হল গুজরাটের ভাবনগরে ৷ দোকানে হনুমান চালিসা গান বাজানোর অপরাধে গুজরাটের ভাবনগরের এক হিন্দু ব্যবসায়ীর উপর হামলা চালালো প্রতিবেশী মুসলিম পরিবারের সদস্যরা । হামলার দৃশ্য দোকানে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়েছে । ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় । হামলাকারী সাহিল, শওকত ও মুন্নার বিরুদ্ধে স্থানীয় বোরাতলাভ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত ব্যবসায়ী রাজেন্দ্র ভাই চৌহান । ভাবনগরের কুম্ভরওয়াড়ায় দর্জির দোকান রয়েছে তার ।
সংবাদ মাধ্যম ওপি ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানা গেছে, মাস ৬-৭ আগে দোকানে হনুমান চালিশা গান বাজানোকে কেন্দ্র করে রাজেন্দ্র ভাই চৌহানের সঙ্গে ঝামেলা করেছিল অভিযুক্ত সাহিল ও তার পরিবারের সদস্যরা । অভিযুক্তরা এসে টেপ বন্ধ করে দেয় তখন । এ নিয়ে সংঘর্ষও হয়েছিল । এরপর গত ৩১ জানুয়ারী একই ব্যাপার নিয়ে ফের দুপক্ষের সংঘর্ষ হয় । উভয় পক্ষই থানাতে অভিযোগ দায়ের করে । পরের দিন সাহিলের বাবা মুন্না বিলাল পদরশী তার দোকানে আসেন। তিনি রাজেন্দ্রকে হুমকি দেন এবং জিজ্ঞাসা করেন কেন তিনি তার ছেলে সাহিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে তাকে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দেন মুন্না বিলাল । এরপরই হামলার ঘটনা ঘটে ।
জানা গেছে, সিসিটিভি তে রেকর্ড হওয়া ঘটনাটি ভিডিওটি পয়লা ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা সাতটার দিকে ঘটেছিল । ওইদিন সাহিল পদর্শি ও শওকত মানকদ রাজেন্দ্রের দোকানে আসে । রাজেন্দ্রের কথায়, সাহিলের হাতে একটি লোহার পাইপ ছিল। দোকানে আসার পর দুজনেই তাকে গালিগালাজ করতে থাকে। এই সময় সাহিল বলে,তুমি আমার দাদা বিলাল ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন কেন ? এ কথা বলে সাহিল লোহার পাইপ দিয়ে তার উপর হামলা চালায়। এই হামলায় তার ডান কানের ওপরে মাথায় আঘাত লাগে। মাথা ফেটে রক্ত বের হতে থাকে । এর পর রাজেন্দ্রের চিৎকার শুরু করেন এবং চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসে । এদিকে লোকজন আসতে দেখে হামলাকারীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন সাহিল ও শওকতের হামলায় আহত রাজেন্দ্র ভাই চৌহানকে চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করে ।
রাজেন্দ্র ভাই চৌহান বলেন,আমাদের এলাকায় হিন্দু- মুসলিম উভয় সম্প্রদায়েরই বাড়ি আছে, কিন্তু শুধুমাত্র এই পরিবারই হনুমান চালিসার বিরোধিতা করে। অন্য কারো কোনো আপত্তি নেই । গত বছর অক্টোবরে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট বিশ্বকাপের ম্যাচে ছেলেরা যখন চত্বরে পটকা ফাটাচ্ছিল, তখন বিলালের পরিবারের সদস্যরাই মূলত ঝামেলা করেছিল। এমনকি তখন তাকে হত্যার হুমকিও দিয়েছিল । তখনও তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ।
যদিও হনুমান চালিসা বাজানোর বিষয়টি এফআইআর-এ উল্লেখ নেই বলে জানা গেছে । এই বিষয়ে রাজেন্দ্র ভাই চৌহান ওপি ইন্ডিয়াকে বলেছেন, ‘আমি পুলিশকে সমস্ত তথ্য দিয়েছি, কিন্তু তারা এফআইআর-এ তা উল্লেখ করেনি, তাই আমি কি করতে পারি ?’ রাজেন্দ্রভাই জানান যে তিনি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) একজন সক্রিয় কর্মী । পুলিশ জানিয়েছে,এফ আই আরে হনুমান চালিশা নিয়ে সমস্যার কথা উল্লেখ নেই,উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল । ঘটনা তদন্ত চলছে ।।