প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০২ ফেব্রুয়ারী : পথের হতশ্রী দশার কারণে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌছাতে চরম নাজেহাল হতে হল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের।শুধু নাজেহাল হওয়াই নয়।কর্দমাক্ত রাস্তায় যেমন হড়কে পড়লো পরীক্ষার্থী।তেমনই জুতো হাতে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌছাতে হল আশা কর্মী থেকে শুরু করে অভিভাবকদের। মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনে এমনই নানা ঘটনার ঘনঘটায় সরগরম থাকলো পূর্ববর্ধমানের রায়নার কুকুরা অনিলাবালা উচ্চ বিদ্যালয় চত্ত্বর।একই দিনে আবার বেহাল রাস্তার কারণে রায়নার পলাশন গ্রামে মাসির বাড়ি পৌঁছাতে হিমসিম খেতে হল রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মাণ্ডিকে। নিজের গাড়ি ছেড়ে কখনও টোটোয় চড়ে আবার কখনও পায়ে হয়ে মন্ত্রী পঁছালেন তাঁর মাসির বাড়ি ।এ নিয়ে দুই এলাকার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানদের সাফাই দিলেন খুব শীঘ্রই রাস্তার কাজ শুরু হবে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা যাতে নিরাপদে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছাতে পারে তা সুনিশ্চিত করতে শুক্রবার সকাল থেকে আসরে নামে জেলার পুলিশ ও প্রশাসন। রায়না ১ ব্লকেও তার কোন ব্যতিক্রম থাকে নি।কিন্তু কুকুরা অনিলাবালা উচ্চ বিদ্যালয়ে হওয়া পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছানোর হাফ কিলোমিটার বেহাল পথ যেন সব তৎপরতাতে জল ঢেলে দেয়।মূল সড়ক পথের কাছের মোরাম রাস্তা পেরিয়ে পরীক্ষার্থীদের পৌছাতে হয় কুকুরা অনিলাবালা বিদ্যালয়ে। দীর্ঘ দিন সেই রাস্তার সংস্কার না হওয়ায় গত দু’দিনের বৃষ্টিতে রাস্তাটি একেবারে কর্দমাক্ত হয়ে গিয়েছে। আর সেই কর্দমাক্ত রাস্তাই এদিন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছাতে বিড়ম্বনায় ফেলে।যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ।
একাধিক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক এদিন সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে বলেন, কুকুরা অনিলাবালা বিদ্যালয়ে হওয়া পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌছানোর রাস্তা একেবারে কর্দমাক্ত। পরীক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌছাতে কালঘাম ছুটে গিয়েছে। স্কুলে পৌছানোর রাস্তা যে এমন বেহাল হবে তা কল্পনারও অতীত ছিল বলে অভিভাবকরা এদিন মন্তব্য করেন। এক আশা কর্মী এদিন পায়ের চটি খুলে তা হাতে নিয়ে কর্দমাক্ত পথে হেঁটে কুকুরা অনিলাবালা বিদ্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। ওনাকে জিজ্ঞাসা করা হয় পায়ের চটি হাতে নিয়ে হাঁটছেন কেন? তখন প্রথমে লজ্জ্যায় মুখ লুকান ওই আশা কর্মী। পরে তিনি বলেন,’পরীক্ষা কেন্দ্রে যাবার রাস্তা একেবারে কদামাখা হয়ে আছে । রাস্তায় স্লিপ কেটে পড়ে যেতে পারেন। তাই সেই ভয়েই পারেই চটি খুলে হাতে নিতে বাধ্য হয়েছে । একই সঙ্গে ওই আশাকর্মী জানান,এই পরীক্ষার্থী এই রাস্তাদিয়ে হেঁটে যাবার সনয় স্লিপ ঈেটে পড়ে গিয়ে কাদা মাখা হয়ে যায় ।তাই তাকে পোষাক পাল্টে পরীক্ষা কেন্দ্রো ঢুকতে হয় ।’
পরীক্ষাকেন্দ্র কুকুরা অনিলাবালা বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তার বেহাল দশার কথা স্বীকার করে নেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পিন্টু মোল্লা । তিনি সাফাই দেন,’এই রাস্তার হাল ফেরানোর কাজের টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্র রাস্তার কাজ শুরু হবে ।’
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মতই রাজ্যের মন্ত্রী জোস্না মাণ্ডিও বেহাল রাস্তার কারণে তাঁর মাসীর বাড়ি যেতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হন।রায়না ১ ব্লকের পলাসন গ্রামে মন্ত্রী জ্যোস্না মাণ্ডির মাসীর বাড়ি।সেখানকার বেহাল রাস্তার কারণে নিজের গাড়িতে চড়ে মন্ত্রীর আর এদিন মাসীর বাড়ি পৌছানো সম্ভব হয় নি। তাই বাধ্য হয়েই নিজের গাড়ি ছেড়ে কিছুটা পথ টোটোয় চড়ে ,আর কিছুটা পথ পায়ে হেঁটে মন্ত্রী তাঁর মাসীর বাড়িতে পৌছান। এ নিয়ে মন্ত্রী জ্যোস্না মাণ্ডির সাফাই,’আমার বিধানসভা এলাকায় জঙ্গল মহলেও এভাবেই কিছুটা টোটোয়! আবার কিছুটা পথ পায়ে হেটেই ঘুরতে হয় ।’
আর পলাশন গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান মনিকা কোনার লজ্জা প্রকাশ করে বলেন,’আগের বোর্ড তৃণমূলের ছিল তারা কেন রাস্তার কাজ করেনি তা জানিনা। আমাদের বাম পরিচালিত বোর্ডের বয়স কয়েক মাস মাত্র হয়েছে। ওই এলাকার দুটোর রাস্তারই টেণ্ডার হয়েগেছে। অসময়ের বৃষ্টির জন্য যদিও কাজ আটকে আছে, বৃষ্টি আর না হলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে ।’।