এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,২৮ জানুয়ারী : ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতকে ভাগ করেছিলেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও জহরলাল নেহেরু । তারপরেও মুসলিমদের বৃহৎ একটা সংখ্যা ভারতের থেকে গেছে । ভারতকে কংগ্রেস সরকার সেকুলার রাষ্ট্র গড়লেও পাকিস্তানকে করা হয়েছে কট্টর ইসলামী রাষ্ট্র । আর কাশ্মীর ইসুকে সামনে রেখে ভারতের মুসলিমদের একাংশকে কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাসবাদে উস্কানি দিয়ে ভারতের সর্বনাশ করতে উঠে পড়ে লেগেছে পাকিস্তান । এসব জেনে বুঝেও দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশক ধরে না দেখার ভান করেছিল ভারতের তথাকথিত সেকুলার রাজনৈতিক দল কংগ্রেস । এদিকে ভারতের কমিউনিস্ট,কংগ্রেস, এবং কংগ্রেস থেকে ভেঙে গড়া আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো ভোট ব্যাংকের লোভে মুসলিমদের একাংশের কট্টরপন্থী মানসিকতাকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে । আর তা দেশের নিরাপত্তার পক্ষে বিপদজনক হয়ে উঠেছে ।
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার আসার পর থেকে একদিকে দেশের অর্থনীতি, অন্যদিকে সন্ত্রাসবাদের আঁতুড় ঘর পাকিস্তানের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলি নির্মূল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । তবে যুদ্ধ নয়,সন্ত্রাসবাদের আঁতুর ঘর পাকিস্তানকে নাস্তানাবুদ করতে নরেন্দ্র মোদী ভরসা রাখছেন দক্ষ কূটনীতির উপর । পাকিস্তানের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে সন্ত্রাসবাদকে চিরতরে নির্মূল করে দিতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী । এতে অনেকাংশে সফলও হয়েছেন তিনি ।
জেনে নিন কিভাবে পাকিস্তানের অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী :
বর্তমানে পাকিস্তানের অর্থনীতি হল মূলত বৈদেশিক ঋণ নির্ভর । বিশ্ব ব্যাংকের কাছে ঋণ নিয়েই চলছে পাকিস্তান । এদিকে বিশ্বব্যাংক পাকিস্তানকে ঋণ পরিশোধ করতে বলেছে অন্যথায় তারা করাচি বন্দর নিলাম করবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে । পাকিস্তানের ঋণ আছে ৮৩ বিলিয়ন ডলার আর তাদের ভান্ডারে আছে মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার ।বিশ্বব্যাংক বলেছে এমতবস্থায় ঋণের টাকা না দিলে করাচি বন্দর নিলাম করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না । এদিকে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারের অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছে সেখানকার আদালত। তিনি বর্তমানে লন্ডনের একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন । লন্ডনে মন্ত্রিসভার বৈঠক হচ্ছে বলে খবর । পাকিস্তান বলেছে, বিশ্বব্যাংকের এই প্রকার অনড় মানসিকতার পিছনে রয়েছে ভারতের হাত ।
পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার আসার আগে আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্য ছিল ৪ বিলিয়ন ডলার । নরেন্দ্র মোদীর সরকার আসার পর চাবাহার বন্দর খুলেছে । এখন পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানে বাণিজ্য এক বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে । যার জেরে পাকিস্তানে টমেটোর দাম প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা। পাকিস্তানে চালা,আটা, ভোজ্য তেলের দাম গগনচুম্বি । তবে নরেন্দ্র মোদীর ‘নোটবন্দি’র সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে পাকিস্তান । মূলত নোটবন্দি’র কারনেই পাকিস্তানের অর্থনীতিতে ধ্বস নামে বলে মনে করেন অভিজ্ঞ মহল । পাকিস্তানের নিউজ চ্যানেলগুলি শুধু মোদীজিকে দিনরাত অভিশাপ দিচ্ছে এবং নিজের দেশের অবস্থা নিয়ে বিলাপ করছে ।
দেউলিয়া পাকিস্তানে এখন কেউ বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত নয়, বিশ্বব্যাংকও নতুন করে ঋণও দিচ্ছে না ।অথচ বিশ্বব্যাং তার অনেক কর্মকর্তাকে ভারতে পাঠিয়ে আরও অর্থ দেওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে । এই পরিস্থিতিতে ভারত আর পাকিস্তানকে আক্রমণ করতে চাইছে না এবং তার মোস্ট ফেভারড নেশনের মর্যাদাও বজায় রেখে দিয়েছে ।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর এই কূটনীতির প্রভাবে পাকিস্তানকে এমন অবস্থায় নিয়ে আসবে যে সোমালিয়ার চেয়ে পাকিস্তানে বেশি অনাহারের সৃষ্টি হবে । আর তা হলে ভারতকে ধ্বংস করা এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন করা পাকিস্তানের পক্ষে আর সম্ভব হবে না । নিরুপায় হয়ে তাদের সন্ত্রাসবাদের রাস্তার ছাড়তে হবে । কাশ্মীরের সন্ত্রাসীদের টাকাও দিতে পারবে না পাকিস্তান । আর এটাই চাইছেন নরেন্দ্র মোদী ।
পাকিস্তানের এই দুরাবস্থার জন্য ভারতের কিছু রাজনৈতিক দল কতটা বিপাকে পড়েছে তার প্রমান কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা মণিশঙ্কর আইয়ারের একটা কথাতেই স্পষ্ট । মণিশঙ্কর আইয়ার পাকিস্তানে একটা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সরাসরি পাকিস্তানের সরকারে কাছেই সাহায্য চেয়ে বসে । নরেন্দ্র মোদীকে সরানোর উদ্দেশ্যেই কংগ্রেস আঞ্চলিক দলগুলি ‘ইন্ডি জোট’ গড়েছিল । কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় ফিরে আসার পূর্ভাভাষ পেয়ে মমতা ব্যানার্জি ও নীতিশ কুমাররা জোট থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় জোট এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে ।
পাশাপাশি পাকিস্তানের সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে গেছে দেশদ্রোহীরায়াও । ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে ‘গজবা-এ-হিন্দ’ করার তাদের স্বপ্ন ক্রমশ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে । দক্ষ কুটনীতির কারনে শুধু পাকিস্তানই নয়,পাকিস্তানপন্থী ভারতের রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির চরম বেকায়দায় পড়তে হয়েছে ।।