এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৭ জানুয়ারী : ভারতীয় বিচার ব্যবস্থায় যে রাজনৈতিক অনুপ্রবেশ ঘটেছে তা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ উঠছে । কলকাতা হাইকোর্টের একটা মামলায় ফের একবার অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করে দিল বলে মনে করছেন অনেকে ৷ রাজ্যে ডাক্তারিতে সুযোগ পেতে ভুয়ো জাতি শংসাপত্র মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় ও আদালতের অন্য বিচারপতি সৌমেন সেনের পৃথক রায়ে বিচার ব্যবস্থায় রাজনীতিকরণের চিত্র তুলে ধরছে বলে মনে করা হচ্ছে ।
আসলে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় । কিন্তু সেই নির্দেশ খারিজ করে দেয় বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ । সিবিআইয়ের দায়ের করা এফআইআরও খারিজ করে দেওয়া হয় ডিভিশন বেঞ্চে । তার পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ও বিচারপতি সেনের মধ্যে
শুরু হয় সংঘাত । বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ কার্যকর হবে না । এমনকি বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলে উল্লেখ করেন যে বড়দিনের ছুটির আগে বিচারপতি সেন তাঁর চেম্বারে বিচারপতি অমৃতা সিংহকে ডেকে পাঠিয়ে রাজনৈতিক নেতার মতো বিচারপতি সিংহকে নির্দেশ দিয়েছিলে ।গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ যে বিচারপতি সেন বলেছিলেন, ‘অভিষেক ব্যানার্জির রাজনৈতিক ভবিষ্যত্ রয়েছে । তাঁকে বিরক্ত করা চলবে না ।’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ,সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দেওয়া ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ গ্রহণযোগ্য নয় । পাশাপাশি তিনি সিবিআইকে আগামী দু’মাসের মধ্যে তদন্ত শুরু করার নির্দেশও দেন ।
এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির নজির বিহীন সংঘাতে শেষ পর্যন্ত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট । সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতত্বে একটি বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হয় । আজ সকাল সাড়ে দশটায় তার শুনানি ছিল । এদিকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি মামলায় যা নির্দেশ দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে আজ শনিবার মামলা (এসএলপি) করার অনুমতি চেয়েছেন রাজ্য সরকারের আইনজীবী। শীর্ষ আদালত অনলাইনেই মামলার অনুমতি দিয়েছিল রাজ্যকে। সেই অনুমতির ভিত্তিতে আজ শনিবার বিশেষ বেঞ্চে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছেন অভিষেক ব্যানার্জি । তিনি মামলায় পার্টি হতে চান বলে জানিয়েছেন । তার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়েছেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি ।।