এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,২৭ জানুয়ারী : ভারতকে জীবাশ্ম জ্বালানির জন্য মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামিক দেশগুলির উপর নির্ভর করতে হয় । এমন অনেক মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আছে যারা শুধু ভারত বিরোধীই নয়, ভারতের বিরুদ্ধে রীতিমতো ষড়যন্ত্র চালিয়ে যায় প্রতিনিয়ত । এই উদ্দেশ্যে তারা পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে প্রচ্ছন্ন মদত দিয়ে আসছে । কাশ্মীরি ইস্যুতে সমর্থন করে আসছে পাকিস্তানকে। এই প্রকার দ্বিচারিতার পরেও মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামিক দেশগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনা নয়াদিল্লি । কারণ ভারতের জীবাশ্ম জ্বালানির ভান্ডার কার্যত শূন্য । এবারে সেই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠে জ্বালানি ক্ষেত্রে দেশকে স্বনির্ভর করতে একটি লক্ষ্য সীমার ধার্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী । সূত্রের খবর, ভারত অতিসত্বর সবুজ হাইড্রোজেন ফুয়েল হাব হতে চলেছে । ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ৪০ শতাংশ দূষণহীন নন-ফসিল জ্বালানি ব্যবহার করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ভারত সরকার ।
যদিও বর্তমানে দেশে সবুজ হাইড্রোজেন জ্বালানিতে চলমান যানবাহন এখনও শূন্যের কাছাকাছি। ভারতে যানবাহন নির্মাতারা এখনও বাজারে হাইড্রোজেন ফুয়েল সেলের যানবাহন চালু করেনি, যেগুলি সম্পূর্ণ কার্বন নির্গমন মুক্ত । অবশ্য টাটা গোষ্ঠী হাইড্রোজেন জ্বালানীতে চালানো কিছু বাস তৈরি করেছে । শোনা যাচ্ছে যে পরিবহন মন্ত্রী নিতিন গড়করি নিজের জন্য একটি হাইড্রোজেন গাড়ি তৈরি করেছেন টাটা মোটরসকে দিয়ে ।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং মনে করেন যে অদূর ভবিষ্যতে ভারতের একটি বৈশ্বিক সবুজ হাইড্রোজেন হাব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জ্বালানী দ্রবণ হিসাবে হাইড্রোজেন শুধুমাত্র জীবাশ্ম জ্বালানী নয় বৈদ্যুতিক পাওয়ার ট্রেনের বিকল্প হিসাবে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই সম্পর্কে বলতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন যে কার্বন নির্গমন কমানোর লক্ষ্য অর্জনের জন্য অপ্রচলিত শক্তি বিনিয়োগ করা উচিত। তার বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন,’সবুজ হাইড্রোজেন শুধুমাত্র আমাদের কার্বন নির্গমন কমাতে সাহায্য করবে না, এটি আমাদের দেশের স্বনির্ভর হওয়ার প্রধানমন্ত্রী মোদীর স্বপ্নের সাথে সঙ্গতিপূর্ণও,অনেক ক্ষেত্রে এটি ভারতকে সহায়তা করবে ।
তিনি আরও বলেছিলেন যে ভারতকে একটি সবুজ হাইড্রোজেন হাব করার জন্য সকলের সম্মিলিতভাবে কাজ করার এখনই সময়। বিশ্ব ইচ্ছুক হলে ভারতে বিনিয়োগ করে হাইড্রোজেন চালিত গাড়িতে তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারে, অন্যথায় ভারত অবশ্যই এতে একটি শীর্ষস্থানীয় দেশ থাকবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের কাছে পরিচ্ছন্ন হাইড্রোজেন শক্তি সমগ্র বিশ্বের কাছে সহজলভ্য করার সম্ভাবনা রয়েছে, সমৃদ্ধিশীল বিশ্ব তৈরির এটাই সঠিক সময়। আসুন আমরা ভারতের সাথে যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত নিশ্চিত করি । মন্ত্রীর মতে, তার তৈরি করা এই পোর্টালটি সারা দেশে হাইড্রোজেন গবেষণা, উৎপাদন, সঞ্চয়, পরিবহন এবং প্রয়োগ সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ওয়ান স্টপ শপ হিসেবে কাজ করবে। এটি ভারত সরকারের হাইড্রোজেন নীতির অংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে, সরকার ৪০ শতাংশ অ-জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করতে চায়। দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতির উন্নতিতে এবং জীবনকে সহজ ও নিরাপদ করার জন্য সবুজ হাইড্রোজেন ইকোসিস্টেম তৈরিতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখতে চায় ভারত বলে জানান জিতেন্দ্র সিং ।
যদিও বৈদ্যুতিক গাড়িগুলি এখনও ভারতে তাদের শৈশবকালে রয়েছে । দেশে সবুজ হাইড্রোজেন জ্বালানিতে চলমান যানবাহন গ্রহণ এখনও শূন্যের কাছাকাছি। ভারতে, অটো প্রস্তুতকারকরা এখনও হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল যানবাহন চালু করেনি যা সম্পূর্ণ কার্বন নির্গমন মুক্ত। এর প্রধান কারণ ব্যয়বহুল উন্নয়ন ব্যয়, যা যানবাহনের ক্রয়ব্যয় বাড়িয়ে দেয়। এর পাশাপাশি হাইড্রোজেন শক্তি উৎপাদনও একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া । তবে মনে করা হচ্ছে যে ২০৩০ সাল নাগাদ হাইড্রোজেন অন্যান্য জ্বালানীর তুলনায় সস্তা হয়ে যাবে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে এর দাম সম্ভবত অন্যান্য জ্বালানির তুলনায় ৫ শতাংশ কম হবে ।।
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে ভারত ২০৬০ সালের মধ্যে শূন্য নির্গমনের দেশে পরিণত হবে। এখন পর্যন্ত আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, জাপান বা ইউরোপের অন্য কোনো দেশ এমন প্রতিশ্রুতি দিতে পারেনি ।।