এইদিন ওয়েবডেস্ক,২৫ জানুয়ারী : ইসলামে ‘জিহাদ’ একটা গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কার্যক্রম বলে মনে করা হয় ।আক্ষরিক ভাবে জিহাদ শব্দটির অর্থ হলো কোনো বিষয়ে সংগ্রাম করা । ভারতে আরেকটি জিহাদের কথা বহুল প্রচলিত আছে….আর তা হল ‘লাভ জিহাদ’। ভিন ধর্মের মেয়েকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ইসলামে ধর্মান্তরিত করাকে ‘লাভ জিহাদ’ বলে অভিহিত করেন অনেকে । কিন্তু ‘ট্রেন জিহাদ’ এর কথা এযাবৎ শোনা যায়নি । এমন একটি অভিনব জিহাদের কথা বর্ণনা করেছেন সনাতন হিন্দু রাকেশ নামে নামে এক এক্স ইউজার্স ।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে(Modified_Hindu9) ওই ব্যক্তি লিখেছেন, ‘ইসলামের নতুন জিহাদ… ট্রেন জিহাদ। এখন পর্যন্ত আপনি নিশ্চয়ই ইসলামের আল তাকিয়া, জিহাদ, লাভ জিহাদ, সন্ত্রাসবাদ, জনসংখ্যা বিস্ফোরণের মাধ্যমে সমাজে ভারসাম্য নষ্ট করা ইত্যাদি উদাহরণ শুনেছেন । এবার জেনে নিন ট্রেন জিহাদ সম্পর্কে…।’
ট্রেন জিহাদের ব্যাখ্যায় তিনি লিখেছেন,’রেলের টিকিটে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকা কেলেঙ্কারি করত, সন্ত্রাসী তহবিলে বিনিয়োগ করত ওই টাকা…
রেলওয়ে সুরক্ষাবাহিনী টিকিট র্যাকেট ফাঁস করেছে এবং অভিযুক্ত ‘সফ্টওয়্যার ডেভেলাপার’কে গ্রেপ্তার করেছে। এই র্যাকেটের জাল পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও দুবাই পর্যন্ত বিস্তৃত । ওই চক্র টিকিট জাল করে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা আয় করত এবং সন্ত্রাসী অর্থায়নে কাজে লাগাত । আরপিএফ ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা গোলাম মুস্তফাকে ভুবনেশ্বর থেকে গ্রেপ্তার করেছে । সোমবার তাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে। আরপিএফ মোস্তফা সহ ২৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। এখন আইবি এবং এনআইএও মামলার তদন্তে যোগ দিয়েছে।’
তিনি আরও লিখেছেন,’মাত্র ১.৪৮ মিনিটে ৩টি টিকিট বুক করত এই র্যাকেট। শতাধিক আইডির মাধ্যমে এই গেম খেলা হত, যা থেকে অনুমান করা যায় এই র্যাকেট কয়েক মিনিটের মধ্যেই হাজার হাজার টিকিট হাতিয়ে নিত। ম্যানুয়ালি টিকিট বুক করতে সাধারণত ২.৫৫ মিনিট পর্যন্ত সময় লাগে । এটা স্পষ্ট যে এই গ্যাংয়ের কারণে, অনেক অভাবী মানুষ যাত্রার টিকিট পেতে পারেনি এবং সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। আরপিএফ-এর মতে, এই গ্যাং কখনও কখনও ৮৫ শতাংশ টিকিট একাই বুক করত, যা যাত্রীদের যথেচ্ছ মূল্যে দেওয়া হত। এতে রেলের আয়ে কোনো প্রভাব না পড়লেও সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
তিনি লিখেছেন,’এএমএস নামের সফটওয়্যারের মাধ্যমে অবৈধ বুকিং করতে ব্যবহৃত হত : আরপিএফের মহাপরিচালক অরুণ কুমার বলেছেন যে মোস্তফার কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে, যাতে এএনএমএস নামে একটি সফ্টওয়্যারও রয়েছে। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে বড় বড় গেম খেলত এই র্যাকেট। অরুণ কুমার জানান, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো কোনো পড়াশোনার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকা মোস্তফা এটি তৈরি করেছেন ।’
ওই চক্রটি ‘ওটিপি এবং ক্যাপচা ছাড়া টিকিট বুক করত বলে জানিয়েছেন সনাতনী হিন্দু রাকেশ । এবিষয়ে তিনি লিখেছেন,’ এই সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে টিকিট জালিয়াতি ঠেকাতে আইআরসিটিসি দ্বারা প্রয়োগ করা সমস্ত বাধা ভেঙে ফেলেছিল ওই র্যাকেটটি । এই লোকেরা ক্যাপচা এবং ব্যাঙ্ক ওটিপির মতো অনেক প্রক্রিয়া ছাড়াই টিকিট বুক করত । এই চক্রটি এই কেলেঙ্কারির মাধ্যমে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা আয় করত। এই গ্যাংয়ের প্রথম টার্গেট ছিল নগদ উপার্জন।’
তিনি দাবি করেছেন যে সন্ত্রাসী অর্থায়নে টিকিটের অর্থ বিনিয়োগ করতে ব্যবহৃত হয় । এই বিষয়ে তিনি লেখেন,’নগদ অর্থ উপার্জনের পরে, এই লোকেরা সন্ত্রাসে অর্থায়নের জন্য এই অর্থ ব্যবহার করেছিল। এখনও অবধি আরপিএফ-এর হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে, এটি প্রকাশ্যে এসেছে যে পুরো চক্রটি সন্ত্রাসবাদী অর্থায়ন এবং অর্থ পাচারের সাথে যুক্ত। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তা সংস্থাগুলি মোস্তফার ল্যাপটপে একটি অ্যাপ্লিকেশনও খুঁজে পেয়েছিল, যার মাধ্যমে জাল আধার কার্ড তৈরি করা হয়েছিল।’
রাকেশ লিখেছেন,’বোমা বিস্ফোরণে অভিযুক্ত ইউপির বস্তির রাজা আশরাফ: ইউপির বস্তি জেলার বাসিন্দা হামিদ আশরাফকে এই চক্রের নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে আরপিএফ। আশরাফ গত বছর পার্শ্ববর্তী জেলা গোন্ডায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ওয়ান্টেড ছিল। গ্রেফতারের ভয়ে তিনি নেপাল হয়ে দুবাই পালিয়ে গিয়েছিলেন।’
সনাতনী হিন্দু রাকেশ আরও দাবি করেছেন, ‘মোস্তফা ৩,০০০ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন।
আরপিএফের ডিজি অরুণ কুমার বলেন, মোস্তফা কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেননি। তিনি ওড়িশার একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন। তিনি আইআরসিটিসি ওয়েবসাইটে ৫৬৩ টি আইডি তৈরি করেছিলেন। এছাড়াও, ২,৪০০ টি এসবিআই শাখা এবং ৬০০ টি আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কেও তার অ্যাকাউন্ট ছিল। এই চক্রটি টিকিট কেলেঙ্কারিতে কতটা পারদর্শিতা অর্জন করেছিল তা থেকে অনুমান করা যায় যে প্রায় ২০,০০০ এজেন্ট এবং অন্যান্য লোক এই চক্র থেকে সফটওয়্যার কিনেছিল।’
সবশেষে তিনি লিখেছেন,’একটি ভারতীয় সফটওয়্যার কোম্পানিও এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ? এ ঘটনায় ভারতীয় একটি সফটওয়্যার কোম্পানির ওপরও নজর রাখছে তদন্তকারী সংস্থা। আরপিএফ ডিজি বলেছেন যে আমরা সন্দেহ করছি যে এই সংস্থাটিও চক্রের সাথে যুক্ত। এই কোম্পানিটি সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের মামলায়ও জড়িত। আরপিএফের মতে, মোস্তফা পাকিস্তানে সক্রিয় তাবলীক-ই-জামাতের সমর্থক।’
মঙ্গlবার(২৩ জানুয়ারী ২০২৪) পোস্ট করা এই প্রতিবেদনটি ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারীর পোস্ট বলে তিনি জানান । তবে গ্রেফতারি কবে হয়েছিল তা তিনি স্পষ্ট করেননি । ঘটনার সত্যতা যাচাই করেনি ‘এইদিন’ । ওই ‘এক্স’ ব্যবহারকারীর হিন্দিতে লেখা পোস্টটি শুধুমাত্র বাংলায় অনুবাদ করা হল ।।