প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২২ জানুয়ারী : প্রবাদে আছে প্রদীপের নীচটা নাকি অন্ধকার।কিন্তু সবসময় বোধহয় এই প্রবাদ সত্যে পরিণত হয়ে উঠতে পারেনা।তাই অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন কালে মুখে হাসি ফুটেছে পূর্ব বর্ধমানের মৃত্তিকা শিল্পীরাও। কারণ সোমবার দীপাবলি না থাকলেও স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাম মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে ওইদিন দেশবাসীকে তাঁদের বাড়িতে প্রদীপ জ্বালানোর কথা বলেছেন।আর দেশবাসী সত্যি যদি সেটা করে,তাহলে অকাল দীপাবলিতে সেজে উঠবে গোটা দেশ।সেই প্রত্যাশায় বাড়তি আয়ের মুখ দেখার জন্য এখন দিন গুনছেন প্রদীপ তৈরিতে যুক্ত মৃত্তিকা শিল্পীরা।
অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে উন্মাদনায়
ভাসছে গোটা দেশ।তারই মধ্যে প্রধামন্ত্রীর আহ্বানে
সাড়া দিয়ে ’রাস্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আর এস এস) ও অন্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি বাড়ি বাড়ি প্রদীপ সরবরাহ করেছে।অনেক বাসিন্দা আবার প্রদীপ কিনতে কুমোর পাড়ায় ভিড় জমাচ্ছেন। আবার অনেকে দোকান থেকে প্রদীপ কিনে নিয়ে
বাড়ি যাচ্ছেন।জেলার কুমোর পাড়ার অনেক মৃৎ শিল্পী মেদিনীপুর,কলকাতা ও চন্দননগরের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রদীপ তৈরির বরাতও পেয়েছেন।সেইসব মৃৎশিল্পীদের দাবি, সব মিলিয়ে তাঁরা দেড় লাখের মতো প্রদীপ ভিন জেলায় ব্যবসায়ীদের কাছে পৌছে দিয়েছেন।অসময়ে এই বরাত পাওয়াটা অপ্রত্যাশিত বলেই মন্তব্য করেছেন
মৃত্তিকা শিল্পীরা।
এ প্রসঙ্গে বর্ধমান শহরের মৃত্তিকা শিল্পী রাজেশ কুম্ভকার বলেন, “সাধারণত কালীপুজোর পরে প্রদীপের চাহিদা আর তেমন থাকে না। কিন্তু রাম মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে পরিস্থিতিটা পাল্টে গেছে। এবর জানুয়ারির শুরুর থেকেই প্রদীপ তৈরির বরাত মিলতে শুরু করে“। অপর মৃৎশিল্পী
বীরেন্দ্র পাঠকের দাবি, “ অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বৌধনের দিন যত এগিয়ে আসতে থাকে প্রদীপের চাহিদাও ততই বাড়তে থাকে। চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে প্রদীপের দামও একটু বাড়ে । তবুও বিক্রীতে ভাটা পড়ে না। ।আর প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে তো মাটির ভাঁড়,ঘট এসব তৈরি কমিয়ে দিয়ে প্রদীপ তৈরি বাড়িয়ে দেওয়া হয় । সোমবারের দিকে তাকিয়ে কম দামের প্রদীপের পাশাপাশি কারুকার্য করা প্রদীপও তৈরি করা হয়েছে বিক্রীর জন্যে।
জেলার বড়শুলের মৃৎশিল্পী রেখা পাল বলেন,
‘হঠাৎ করেই রবিবার সকালে হঠাৎ ৪০০ প্রদীপ তৈরির বরাত পাই। জরুরী ভিত্তিতে সেই প্রদীপ তৈরি দেওয়ার কথা বলাা হয়েছিল । তাই রবিবার সারাটা দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে সন্ধ্যার মধ্যেই
৪০০ প্রদীপ তৈরি করে ফেলেন ।’ তবে কারিগরের অভাবে বেশী বরাত নিয়ে প্রদীপ তৈরি করতে না পারারও আক্ষেপের সুর শোনা গিয়েছে মৃৎশিল্পী সমীর পাল ও প্রতাপ পালদের কথায়। তাঁরা বলেন,
‘এই সময়ে মাটির প্রদীপের চাহিদা থাকে না বলে কারিগররা চাষের কাজে ব্যস্ত।রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে মাটির প্রদীপ তৈরীর বরাত দেওয়া বেড়ে যাবে সেটা বুঝতেও পারিনি!’