এইদিন ওয়েবডেস্ক,বার্লিন,১৯ জানুয়ারী : বিশ্বের অমুসলিম দেশগুলিতে মুর্তিমান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শরণার্থীরা । শরণার্থীদের আগমনে সন্ত্রাসবাদ,ধর্ষণ,খুনের মত ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়ে চলেছে । কিন্তু ফ্রান্স,জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, আমেরিকা,ব্রিটেনসহ ইউরোপের দেশগুলির কথিত সেকুলার বামপন্থী বা বামপন্থী মানসিকতার দলগুলি নিজেদের ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে শরণার্থীদের অপরাধ প্রবনতাকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । ওই সমস্ত অপরাধের জন্য ইউরোপের দেশগুলিতে কঠোর আইনও নেই । ফলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির প্রকৃত বাসিন্দাদের মধ্যে একদিকে যেমন শরণার্থীদের প্রতি আক্রোশ বৃদ্ধি পাচ্ছে,অন্যদিকে তেমনি তথাকথিত সেকুলার রাজনৈতিক দলগুলির উপর আর তারা ভরসা রাখতে পারছে না । যেকারনে ইউরোপের একাধিক দেশে বাড়ছে শরণার্থী বিদ্বেষ ও উগ্র জাতীয়তাবাদ । গত বছর নেদারল্যান্ডসে ডানপন্থী গির্ট ওয়াল্ডার্সের জয় তারই প্রমান ।
পিছিয়ে নেই ইউরোপের আরও এক দেশ জার্মানিও । জার্মানির রাজনীতিতে আবির্ভাব ঘটেছে জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল, অল্টারনেটিভ ফর ডয়েচলান্ড(এএফডি)-এর । বর্তমানে জার্মান পার্লামেন্টে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে এএফডি । জাক্সেন, ব্রান্ডেনবুর্গ ও থুইরিঙ্গেন প্রভৃতি জার্মান রাজ্যগুলিতে এই দলের জনপ্রিয়তা এখন আকাশচুম্বী । জার্মানির পরিসংখ্যান বলছে, প্রাক্তন চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের রাজনৈতিক দল ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি সিডিইউর পর দ্বিতীয় জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলটির নাম এএফডি । দেশটির ১৬ টি অঙ্গরাজ্যর বাকিগুলিতেও প্রতিদিন হু হু করে বেড়ে চলেছে এএফডি-এর জনপ্রিয়তা । ফলে প্রমান গুনছে ক্ষমতাসীন ও তথাকথিত সেকুলার বামপন্থী দলগুলি ।
এই কারনে এএফডিকে রাজনীতির ময়দান থেকে সরানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে তারা । এএফডিকে ‘নব্য নাৎসি’ আখ্যা দিয়ে ওই দলগুলি অপপ্রচার চালাচ্ছে যে এএফডি আবারও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে নাৎসী যুগে ফিরিয়ে আনতে চাইছে জার্মানিকে । বুধবার (১৭ জানুয়ারি ২০২৩) এএফডি এর বিরুদ্ধে জার্মানির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয় । ব্রান্ডেনবুর্গের পোস্টডামসহ নর্দরাইন ওয়েস্টফালেন অঙ্গরাজ্যের কোলনে এএফডিবিরোধী সমাবেশে অংশ নেয় তথাকথিত সেকুলার দলের নেতাকর্মীরা । সমাবেশে চ্যান্সেলর শলজসহ বিদেশমন্ত্রী আনেলেনা বেয়ারবককেও দেখা গিয়েছিল । তারা জাতীয়তাবাদী অল্টারনেটিভ ফর ডয়েচলান্ড(এএফডি)কে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি তুলছে ।
তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নে দলের অবস্থান সুদৃঢ় করার পাশাপাশি, ইসলামি শরণার্থী বিদ্বেষী মনোভাবের কারণে জার্মানির সাধারণ জনগণের ব্যাপক সমর্থন পাওয়া দলটিকে এত সহজে নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন জার্মানির রাজনীতি বিশ্লেষকরা । সেকুলারিজমের নামে ঘৃণ্য তোষামোদি রাজনীতিতে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছে জার্মানির সাধারণ নাগরিকরাও । অদূর ভবিষ্যতে হয়ত নেদারল্যান্ডসের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জার্মানির শাসন ক্ষমতায় দেখা যেতে পারে অল্টারনেটিভ ফর ডয়েচলান্ডকে ।
উল্লেখ্য,ইউরোপের দেশগুলিতেও তথাকথিত সেকুলার রাজনীতির নামে মুসলিম তোষামোদের রাজ্যনীতি দেখা যায় ভারতেও । ভোটব্যাঙ্ক বাড়ানোর লোভে ব্যাপক হারে অনুপ্রবেশকারী মুসলিমদের এদেশে ঢোকানো হয়েছে এবং হচ্ছে । বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী আসামে ক্ষমতায় থাকার সময় রাজ্যের জনবিন্যাসের ব্যাপক পরিবর্তন করে দিয়েছে কংগ্রেস । আসামের বিস্তীর্ন এলাকা আজ হিন্দু শুণ্য । একই চিত্র দেখতে পাওয়া যায় পশ্চিমবঙ্গেও । পূর্ববর্তী বামফ্রন্ট সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বর্তমান শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষামোদের অভিযোগ ওঠে বারে বারে । এমনকি তৃণমুলের কিছু কিছু নেতানেত্রীকে অনুপ্রবেশকারীদের ভোটারকার্ড করে দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করতে শোনা গেছে প্রকাশ্য মঞ্চে ।।