প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৮ জানুয়ারী : দোর গোড়ায় লোকসভার ভোট।আর আগে বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । প্রশাসন ও তৃণমূল সূত্রে খবর, সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৪ জানুয়ারি অর্থাৎ বুধবার দুপুরে বর্ধমানের গোদার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে মুগ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা। সেখান থেকে তিনি প্রশাসনিক পরিষেবা প্রদান করার পাশাপাশ জেলার একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করবেন বলো জানা যাচ্ছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের পাশাপাশি শাসক শিবিরের নেতা, মন্ত্রীরাও জোরদার তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন।
নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সভার খবর আসার পরেই বৃহস্পতিবার বৃষ্টির মধ্যেও সভাস্থলের মাঠ পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। পাশাপাশি জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি দফায় দফায় বিভিন্ন দফতরকে নিয়ে বৈঠকও করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষনের জন্যে কী ভাবে অনুষ্ঠানটিকে সাজানো যায়,তা নিয়েও শলা পরামর্শ করা শুরু করে দিয়েছেন জেলার প্রশাসনিক কর্তারা। একইভাবে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় লক্ষাধিক মানুষকে সমাবেত করতেও শাসক শিবিরের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এদিন জানান,২৪ জানুয়ারী প্রশাসনিক সভা করতে মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমানে আসছেন বলে বার্তা এসেছে। সেই সভা নিয়ে এদিন থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। প্রায় এক বছর পরে মুখ্যমন্ত্রী আমাদের জেলায় আসছেন। তাঁকে দেখতে ও তাঁর কথা শোনার জন্যে প্রচুর মানুষ গোদার মাঠে ভিড়ও করবেন। তাঁরা যাতে সুষ্ঠুভাবে সভায় সনবেত হতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হবে ।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার পর দিন অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি কলকাতায় পুরমন্ত্রীর কাছে সশরীরে হাজির হওয়ার ডাক পড়েছে জেলার কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান সহ ১৭ জন কাউন্সিলরের।
জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন,এমনই বার্তা এসেছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বর্ধমানে প্রসাসনিক সভার পর দিনেই বৈঠকটি করা সম্ভব হবে না কি পিছিয়ে যাবে , সেই বিষয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি ।
এদিকে আবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার পরদিনেই কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান সহ সকল কাউন্সিলারদের পুরমন্ত্রীর কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছেন। তা নিয়ে কালনার রাজনৈতিক মহলেও জোর চর্চা শুরু হয়েছে । জানা গিয়েছে,কালনা পুরসভা তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে থাকলেও চেয়ারম্যান আনন্দ দত্তকে দলের বাাকি ১৬ জন কাউন্সিলর কিছুতেই যেন মেনে নিতে পারছিন। এ নিয়ে অশান্তির জেরে মাঝে মধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কালনা পুরসভা। যা দেখে উল্লাসে ফেটে পড়েন একমাত্র বিরোধী কাউন্সিলার। এখন চেয়ারম্যানের সঙ্গে কাউন্সিলরদের সংঘাতের মাত্রা আরো বেড়ে গিয়েছে। আনন্দ দত্ত কে চেয়ারম্যানকে পদ থেকে সরাতে কাউন্সিলরদের সই করা অনাস্থাপত্র ইতিমধ্যেই মহকুমা ও জেলা প্রশাসনের কাছে জমা পড়ে।লোকসভা ভোটের আগে এই বিরোধের নিস্পত্তি ঘটিয়ে দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতেই পুরমন্ত্রীর তলব বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।
এ নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা । তাদের কটাক্ষ,এতে গুরুয়া ঝড় ধেয়ে আসার দাপটের বার্তা পেয়ে ঘর গুছোনোর মত ব্যাপার । তবে লাভ কিছু হবে না। লোকসভা ভোটে গেরুয়া ঝড়ে এই বঙ্গের ঘাসফুল শিবির লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবেই ।।