এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেল আবিব,১৮ জানুয়ারী : ইসলামি রাষ্ট্র ও অমুলিম দেশের কট্টরপন্থী মুসলিমদের কাছে ফিলিস্তিন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাস হল ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’ । কিন্তু গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাস যে নৃশংসতা চালিয়েছিল তা কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামি স্টেটকেও (আই এস আই এস) হার মানিয়ে দিয়েছে । অন্তঃসত্ত্বা ইসরায়েলি তরুনীর পেট চিড়ে গর্ভস্থ ভ্রুণের শিরোচ্ছেদ করতে হাত কাঁপেনি হামাস নরপশুদের । এমনই বর্বরোচিত নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেসের (আইডিএফ) ১৯ বছরের এক সেনা সার্জেন্ট আদির তাহারকে । আদিরের শিরোচ্ছেদ করে তার কাটা মাথাটা গাজায় নিয়ে গিয়ে ১০,০০০ ডলারে বিক্রি পর্যন্ত করার চেষ্টা করেছিল মুসলিমদের তথাকথিত ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’ হামাস নরপশুরা ।
ছেলের নির্মম হত্যার বিষয়ে ইসরায়েলি চ্যানেল ১৪-এর সাথে কথা বলেছেন আদির তাহারের বাবা ডেভিড । তিনি বলেছেন,’হামাস প্রথমে আমার ছেলের দিকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র এবং তিনটি গ্রেনেড ছোড়ে । সিটি স্ক্যান থেকে আমি সম্প্রতি পেয়েছি যে ছেলের পুরো শরীরটি শ্রাপনেলে পূর্ণ এবং দুর্ভাগ্যবশত আদিরকে হত্যা করার পরে তার দেহও অপব্যবহার করা হয়েছিল ।’ তিনি তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে বলেন,’সন্ত্রাসী, বর্বর, তাদের জন্য বলার মত আমি কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না, তারা তার শিরশ্ছেদ করে গাজায় নিয়ে গেছে। আমি আমার সাধ্যমত সব করেছি, এটা সহজ ছিল না, শেষ পর্যন্ত আমি মাথা ছাড়া একটি শরীর পেয়েছি। আমি আর্মিদের সাথে খুব পীড়াপীড়ি করলাম লাশ দেখার জন্য। তারা আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল যে আমার এটা দেখা উচিত নয় ।’
তিনি বলেন,’আমি আমার সন্তানকে কবরস্থ করার আধ ঘন্টা আগে, তার মৃতদেহ মাউন্ট হারজল (সামরিক কবরস্থানে).পৌঁছেছিল, আমি যখন একা ছিলাম তখন আমি কফিনটি খুলেছিলাম । আমি ঠিক বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি কি কবরস্থ করছিলাম। আমি কুকুরের ট্যাগ এবং ডিএনএ পরীক্ষা এবং প্যান্টের জিনিসপত্রের মাধ্যমে আমার ছেলেকে শনাক্ত করেছি ।’
ডেভিড চ্যানেল ১৪ কে বলেন,’আমি যখন আদিরকে কবর দিয়েছিলাম তখন আমি জানতাম যে আমি আমার সন্তানকে তার অপরিহার্য অংশ ছাড়াই কবর দিচ্ছি। তারপর যাত্রা শুরু হয় সেই হারিয়ে যাওয়া অংশের খোঁজে । দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে আমি আমার সাধ্যমত সবার কাছে গিয়েছিলাম এবং অন্তত ছেলে কোথায় আছে তার উত্তর পেতে ধরে ধরে জিজ্ঞাসা করেছি ।’
তিনি বলেন,’টেলিগ্রাম থেকেও একটি ভিডিও আছে । ইন্টারনেট হামাসের নৃশংস ভিডিওতে প্লাবিত হয়েছিল। আমি অবশ্যই বলতে পারি যে আমি প্রায় সবকিছুই দেখেছি, দুর্ভাগ্যবশত আমি আমার ছেলের ভিডিও পেয়েছি, যেখানে আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে আমার সন্তান তার এই অপরিহার্য অংশটি ছাড়াই রয়েছে ।’
তারপর ডেভিড বলেছিলেন যে তিনি একটি অফিসিয়াল উত্তর পেয়েছেন, এটি বর্ণনা করে “দুই গ্রেপ্তার সন্ত্রাসীর জিজ্ঞাসাবাদের সময় শিন বেট বুঝতে পেরেছিল যে তাদের মধ্যে একজন মাথা বিক্রি করার চেষ্টা করেছিল৷ একজন সৈন্যের মাথা ১০ হাজার ডলার। এটি অত্যন্ত বর্বরোচিত কাজ ।’
ডেভিড চ্যানেল ১৪-কে অনুসন্ধান অভিযানের ব্যাখ্যা করে বলেন,’তারপর একটি নির্দেশনা সাঁজোয়া বাহিনী সহ একটি অভিজাত ইউনিটে নেমেছিল এবং তারা গাজার কেন্দ্র প্যালেস্টাইন স্কোয়ারে প্রবেশ করেছিল,একটি ফ্রিজারের ভিতরে টেনিস বল সহ একটি ডাফেল ব্যাগের ভিতরে কিছু সন্ত্রাসীর নথি, এবং একজন সৈনিকের মাথা পায় । তারা আড়াই মাস পরে যা রেখেছিল তা আনতে সক্ষম হয়েছিল, সম্ভবত সেখানেও এটি অপব্যবহার করা হয়েছিল।’ ।
তিনি বলেন,’আমরা আদিরের হাড়গুলি উদ্ধার করেছি, তারা যা এনেছিল, ডিএনএ পরীক্ষা করেছি, দাঁতও পেয়েছি এবং কবর দিয়েছি । এটি আমার চোখে একটি সুস্পষ্ট অলৌকিক ঘটনা যে আমি আমার ছেলের আত্মার শান্তি দিতে পারি। আমরা বর্তমানে যা করার চেষ্টা করছি তা হল আদিরের জন্য একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করা ।’ সপ্তাহ তিনেক আগে ডেভিড তার ছেলের হাড়গোড় কবরস্থ করেন বলে জানা গেছে ।
যুদ্ধের ১০৩ তম দিনে, বুধবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন,’যুদ্ধ চলবে এবং হামাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে – যতক্ষণ না আমরা আমাদের সমস্ত লক্ষ্য পূরণ করছি যুদ্ধ চলবে ।’।