এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,১৭ জানুয়ারী : বারাণসীর বিতর্কিত জ্ঞানভাপি কাঠামোতে পাওয়া গেছে হিন্দু মন্দিরের অসংখ্য নিদর্শন । তবে সব থেকে যেটা ঘিরে বিতর্ক,তা হল জ্ঞানভাপি কাঠামোতে অবস্থিত শিবলিঙ্গটি । ২০২২ সালের মে মাসে জরিপের সময় এখান থেকে শিবলিঙ্গ পাওয়া গিয়েছিল । প্রাচীন ওই শিবলিঙ্গের মাথায় ঢালাই করে মুসলিম পক্ষ সেটি ফোয়ারা বলে চালানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠছে ৷ মুসলিমদের পক্ষ থেকে এই স্থানটিকে উজুখানা বা নামাজ পড়ার পর মুখ, হাত ও পা ধোওয়ার জায়গা হিসাবে দাবি করে আসছে । শিবলিঙ্গের স্থান পরিষ্কার করার অনুমতি চেয়ে গত ১২ জানুয়ারী সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল হিন্দুপক্ষ । মঙ্গলবার(১৬ জানুয়ারী ২০২৪) হিন্দুপক্ষের সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে শিবলিঙ্গের স্থান পরিষ্কার করার অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ।
সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ আবেদনের শুনানি করে স্থানটি পরিষ্কারের অনুমতি দেন। এই সময়ে, উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে একই দাবি করা হয়েছিল যে এখানে পরিষ্কারের অনুমতি দেওয়া হোক। এর আগে মুসলিম পক্ষও একই ধরনের আবেদন করেছিল। এখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বারাণসীর ডিএম-এর উপস্থিতিতে ওই স্থানটি পরিষ্কার করা হবে বলে জানা গেছে ।
আদালতের কাছে আবেদনে হিন্দু পক্ষ জানিয়েছে, জ্ঞানবাপির বিতর্কিত কাঠামোয় শিবলিঙ্গ পাওয়া যাওয়ার পর এই জলাশয়টি সিল করে দেওয়া হয়েছে। সিলগালা করায় তা পরিষ্কার না হওয়ায় এতে থাকা মাছগুলো মারা গেছে। এ কারণে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে । যেখানে মাছ মারা গেছে, সেখানে একটি শিবলিঙ্গ রয়েছে যা হিন্দুরা পূজা করে। হিন্দুদের শ্রদ্ধার এই স্থানটি পরিষ্কার রাখা উচিত । সেজন্য এখানে পরিষ্কার করার অনুমতি দেওয়া উচিত। জানা গেছে, মাছের মৃত্যুর জন্য হিন্দু পক্ষ মসজিদের আঞ্জুমান ইসলামিয়া কমিটিকে দায়ী করেছে। হিন্দু পক্ষ জানিয়েছে, আঞ্জুমান ইসলামিয়া কমিটি এই পুরো কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে। তাই বিষয়টি মাথায় রেখে ওই জায়গা পরিষ্কার করার অনুমতি দিতে হবে। যদিও মুসলিম পক্ষ পরিষ্কার করার জন্য হিন্দুদের এই আবেদনের বিরোধিতা করেনি।
প্রসঙ্গত,হিন্দু পক্ষ প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিল যে বারাণসীর জ্ঞানবাপির বিতর্কিত কাঠামোয় প্রাচীন শিবলিঙ্গটির অস্তিত্ব আছে । এরপর ২০২২ সালের ১৬ মে জ্ঞানবাপির সমীক্ষার সময় শিবলিঙ্গ নজরে পড়লে হিন্দুপক্ষের দাবি সত্য প্রমাণিত হয় । পরের বছর জুলাই মাসে বারাণসীর জেলা আদালত ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের মাধ্যমে জ্ঞানভাপি কমপ্লেক্সের জরিপের নির্দেশ দেয় । কিন্তু মুসলিমপক্ষ এ এস আইকে দিয়ে জরিপের ঘোর বিরোধী ছিল । বারাণসীর জেলা আদালতের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মুসলিম পক্ষ এলাহাবাদ হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছিল, কিন্তু তাদের বিরোধিতা ধোপে টেকেনি, জরিপ অব্যাহত ছিল । এএসআই জরিপের সময় জ্ঞানভাপি কাঠামোতে খোদাই করা ত্রিশুল,কলস, পদ্মফুল, দেবদেবীর মূর্তির মত অসংখ্য হিন্দু মন্দিরের নির্দশন দেখতে পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয় । গত বছর ১৮ ডিসেম্বর সিল করা খামের মধ্যে সমীক্ষার রিপোর্ট আদালতে জমা দিয়েছে এএসআই । এখন আদালতের শেষ সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে বিবদমান দুই পক্ষ ।।