এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৬ জানুয়ারী : নিজের ‘রোহিঙ্গা বাহিনী’ দিয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট আধিকারিকদের পেটানো উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সন্দেশখালি তৃণমূল নেতা শাজাহান শেখকে বাঁচানোর যে পুরোদমে চেষ্টা চলছে তা প্রমাণিত হলো মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের শুনানিতে । সন্দেশখালিকাণ্ডে প্রথম থেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল । আজও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ।
ইডির অভিযোগ যে, পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করতে পারবে না,তাই সিবিআই বা অন্য কোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে এই মামলার তদন্তভার দেওয়া হোক। এমনকি শাহজাহান কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতনামা দাখিল করার পরেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার না করায় ইডি আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে
পুলিশ তদন্ত করলে তথ্য এবং নথি বিকৃত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
যদিও সন্দেশখালিকাণ্ডে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের বিরোধিতা করে রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয় যে সন্দেশখালির ঘটনায় পুলিশ এফআইআরও দায়ের করে তদন্ত করছে । এই পরিস্থিতিত্ব অন্য সংস্থাকে তদন্তভার দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে রাজ্য সরকারের আইনজীবী । রাজ্যের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়, এখানে পুলিশের বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ করা হচ্ছে? এখানে পুলিশ কী দোষ করল? একটি ঘটনা ঘটেছে ।’
এরপর রাজ্যের তরফে আদালতে উপস্থিত হওয়া অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত এবং আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন,’আপনারা কি সঠিক ভাবে তদন্ত করতে ইচ্ছুক? আদালত কি আপনাদের সেই সময় দেবে ? আদালতের উপরে আস্থা রাখতে পারবেন ?’ পাশাপাশি এই মামলায় তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়ার বিষয়ে বিচারপতি বলেন, ‘অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, এটা দেখতে চাই। পুলিশ যদি তা করতে পারে তদন্তভার তাদের হাতে থাকা নিয়ে আদালত সিদ্ধান্ত নেবে ।’
বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় সন্দেশখালি মামলার পরবর্তী শুনানি হবে । সন্দেশখালিকাণ্ডে দায়ের হওয়া আরও একটি এফআইআরের কেস ডায়েরিও তলব করেছে আদালত । এখন দেখার বিষয় যে ইডির আবেদনের ভিত্তিতে সন্দেশখালি কান্ডে আদালত সিবিআইকে তদন্তভার দেয় কিনা । আজ ইডির হয়ে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) এসভি রাজু এবং আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী আদালতে সওয়াল করেন ।
এদিকে সন্দেশখালি কান্ডের ১১ দিন পরেও বেপাত্তা ইডির আধিকারিকদের উপর হামলার মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান । সোমবার আইনজীবীর মাধ্যমে সন্দেশখালি মামলায় নিজেকে যুক্ত করার জন্য আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন শাহজাহান শেখ । কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই নিজের সেই আবেদন প্রত্যাহার করে নেন তিনি । এতেই স্পষ্ট যে শাজাহান শেখকে বাঁচাতে তৃণমূল কংগ্রেসের বড় বড় মাথা কাজ করছে । কিভাবে দলীয় নেতাকে সন্দেশখালি মামলা থেকে বাঁচানো যায় তা নিয়েছে চলছে চুলচেরা বিচার বিশ্লেষণ । কিন্তু শাজাহান শেখ বর্তমানে কোথায় আছেন তা এখনো স্পষ্ট নয় । তবে তার অবস্থান সম্পর্কে রাজ্য পুলিশ যে অবগত আছে সেটা স্পষ্ট বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল ।।