এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঝাড়খণ্ড,১৬ জানুয়ারী : বছর তিনেক আগে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে রেখে রোগে মৃত্যু হয় এক মুসলিম যুবকের । এদিকে দুই সন্তানকে নিয়ে তিনজনের সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছিলেন যুবকের স্ত্রী । যেকারণে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন । স্বামী হিসাবে বেছে নেন এক হিন্দু যুবককে । কিন্তু একজন হিন্দুকে বিয়ে করায় মহিলার মায়ের কোনো আপত্তি না থাকলেও তার মামা সম্পর্ক ছাড়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল । সেই চাপ উপেক্ষা করেই সংসার করে আসছিলেন ওই মুসলিম মহিলা । শেষে মহিলার স্বামীকে মদের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তার মামার বিরুদ্ধে । ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের কোডারমা (Kodarma) জেলার ডোমচাঁচ (Domchanch) এলাকায় । সুলতানা খাতুন (Sultana Khatoon) নামে ওই মহিলা তার মামা সুলেমান মিঁয়ার (Suleman Miyan) বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগে এফআইআর রজু করেছেন । কিন্তু অভিযোগ দায়েরের পরেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ ।
মিডিয়া রিপোর্টে জানা গেছে,সুলতানা খাতুনের প্রথমপক্ষের স্বামী বছর তিনেক আগে মারা যান । এরপর দুই সন্তানের জননী সুলতানা তার পরিচিত হিন্দু যুবক ঘনশ্যাম দাসকে(Ghanshyam Das) বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন । সুলতানা জানিয়েছেন, এই বিয়েতে তার মামা সুলেমান মিঁয়া ছাড়া আর কারও আপত্তি ছিল না । তিনি বলেন,’আমার মায়ের সম্মতিতেই ঘনশ্যাম দাসের সঙ্গে কোর্ট ম্যারেজ করেছি। আমার দুটি ছোট বাচ্চা আছে। তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই আমাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে । বিয়ের সময় মামা আমায় হুমকি দিয়ে বলেছিলেন যে আমি ঠিক কাজ করছি না । মামার সেই হুমকি উপেক্ষা করেই আমি ফের বিয়ের পর ঘনশ্যামের সঙ্গে সংসার করতে শুরু করি । কিন্তু আমার মামাকে যে আমাকে ফের বিধবা করে দেবে তা স্বপ্নেও কল্পনা করিনি ।’
স্বামীকে হত্যার ঘটনা প্রসঙ্গে সুলতানা বলেন,’২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাতে আমার স্বামী বাড়ি ফিরে প্রচন্ড বমি করতে শুরু করেন । তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখান থেকে তাকে রিমস রেফার করা হয়। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি । তবে আমার স্বামী মৃত্যুর আগে আমাকে বলেছিলেন যে তিনি সুলেমান মিঁয়া এবং অন্য চারজনের সাথে মদ পান করেছিলেন ।’ তার অভিযোগ যে আমি একজন হিন্দুকে বিয়ে করার অপরাধেই আমার মামা আমার স্বামীর মদে বিষ মিশিয়ে দিয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে ।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর ১৩ ডিসেম্বর স্বামীর মৃত্যুর পর সুলতানা পরের দিন তার মামার বিরুদ্ধে থানায় একটি এফ আই আর রজু করেন । কিন্তু তার অভিযোগ যে মামলা দায়েরের এক মাস অতিবাহিত হলেও মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি । এখন তিনি বিচারের জন্য সর্বত্র আবেদন করে বেড়াচ্ছেন । যদিও এই বিষয়ে কোডারমার এসপি অনুদীপ সিং সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন যে রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু ঘটনার এতদিন পরেও কেন খুনির বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।।