দিব্যেন্দু রায়,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),০৮ জানুয়ারী : সাম্প্রতিক সময়ে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে চুরি-ডাকাতির ঘটনা । গত শনিবার রাতে পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামে এক পুলিশকর্মীর বাড়িতে ঢুকে তাকে বেঁধে রেখে নগদ ও সোনার গহনা মিলে লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী লুটপাট চালিয়ে পালিয়ে যায় ৬-৭ জনের একটি ডাকাতদল । সেই ডাকাতির কিনারা এখনো হয়নি । তার জের মিটতে না মিটতেই আউশগ্রামের পার্শ্ববর্তী মঙ্গলকোট ব্লকের খেড়ুয়া গ্রামের একটি মন্দিরের তালা ভেঙে দুটি প্রাচীন বিষ্ণুমূর্তি নিয়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা । রবিবার রাতে এই চুরির ঘটনার পর আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তার কোনো কিনারা করতে পারেনি পুলিশ । স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ যে এই চুরির পিছনে রয়েছে প্রত্নসামগ্রী পাচারকারী কোনও চক্র । ঘটনাকে ঘিরে ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দারা । স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি,অবিলম্বে বহু মুল্যবান ওই দুই প্রাচীন বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার করা হোক ।
প্রসঙ্গত,পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রাচীন জনপদগুলির মধ্যে অন্যতম মঙ্গলকোট । এখনো এই এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রচুর প্রাচীন স্থাপত্যের ধ্বংসাবশেষ । রয়েছে দুটি সতীপীঠ সহ প্রাচীন মন্দির । মঙ্গলকোটের প্রায় মাঝ বরাবর প্রবাহিত হওয়া অজয় নদের জল কমলে প্রায়ই দেবদেবীর প্রাচীন মূর্তি উদ্ধার হয় । গ্রামবাসীদের নজরে পড়লে সেগুলি উদ্ধার করে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও নদীর চড়ে পাওয়া অধিকাংশ মূর্তি প্রত্নসামগ্রী পাচারকারীর হাতে পড়ে তা লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যায় বলে অভিযোগ ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,মঙ্গলকোট থানার খেড়ুয়া গ্রামের একটি মন্দিরে পাল ও সেন যুগের সমসাময়িক আমলের ওই দুটি বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার করে রাখা হয়েছে ১৯৮৬ সালে । তারপর থেকে গ্রামবাসীরা দেবতার নিত্যসেবা করে আসছেন । অনান্য দিনের মত রবিবার সন্ধ্যাতেও সন্ধ্যারতি সম্পূর্ণ করে মন্দিরে তালা বন্ধ করে চলে যান পুরোহিত । আজ সোমবার সকালে গ্রামবাসীরা দেখতে পান মন্দিরের দরজার তালা ভাঙ্গা এবং মন্দিরে ঢুকতেই তারা দেখতে পান যে বিষ্ণুমূর্তি দুটি উধাও হয়ে গেছে । মন্দিরের মূর্তি চুরির কথা জানাজানি হতেই গ্রামবাসীরা ছুটে আসেন । ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় । এদিকে নিয়মিত ব্যবধানে পূর্ব বর্ধমান জেলায় চুরি ডাকাতির ঘটনা ঘটায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জেলার বাসিন্দারা । বিশেষ করে দুষ্কৃতীরা মন্দিরকে টার্গেট করায় চরম ক্ষুব্ধ জেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ।।