এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৪ ডিসেম্বর : বাংলাদেশের সরকারি স্কুলের পাঠক্রমে পরিকল্পিতভাবে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে ইসলামি মৌলবাদ । মুসলিম পড়ুয়াদের পাশাপাশি ছোটো ছোটো হিন্দু পড়ুয়াদের পর্যন্ত ইসলামের নবী ও ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে । কিন্তু পাঠ্যপুস্তকের মলাটের শেষ পৃষ্টার ভিতরে দেবী দুর্গার ছবি থাকায় তৃতীয় শ্রেনীর ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বইটি পর্যন্ত বাতিল করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার । জানা গেছে, দেবী দুর্গার ছবিটি বাদ দিয়ে নতুন করে ছাপিয়ে একই বই সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । এনিয়ে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে । এই ঘটনাকে বাংলাদেশের ‘হিন্দুদের বিরুদ্ধে সরকারি ষড়যন্ত্র’ বলে বর্ণনা করেছেন অভ্রনীল সনাতনি নামে এক এক্স ব্যবহারকারী ।
উল্লেখ্য,বাংলাদেশের সরকারি প্রাথমিক স্কুলের পাঠক্রমে ইসলামের নবীর জীবন ও ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে প্রশ্নত্তোর মূলক প্রশ্ন ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে । ফলে হিন্দু পড়ুয়ারা পর্যন্ত ইসলাম ও ইসলামের নবী সম্পর্কে জানতে বাধ্য হচ্ছে । সেখানে হিন্দু বা অন্য ধর্ম সম্পর্কে বিশেষ কিছুই বলা হয়নি । এদিকে তৃতীয় শ্রেনীর হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বইটিতেও ইসলাম ধর্মকেই মূলত প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে । ফলে শৈশব থেকেই নিজের ধর্ম সম্পর্কে কিছু জানতে পারছে হিন্দু পড়ুয়ারা । এই ঘটনাকে সরকারিভাবে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা বলে ব্যাখ্যা করছেন বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ । বাংলাদেশের হিন্দুদের অভিযোগ,বাংলাদেশের সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলিতে কার্যত মাদ্রাসা শিক্ষা লাগু করার চেষ্টা চলছে ।
শেখ হাসিনা সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক রাজবংশী । তিনি ফেসবুকে লিখেছেন,’তৃতীয় শ্রেনীর হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বইতে এধরনের কুকর্ম করার পরেও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের উপরে কেনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না এর নির্দিষ্ট কোনো উত্তর কি কারো কাছে আছে? জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড যদি এই বই প্রত্যাহার না করে নির্বাচনের পর সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট ৬৪ জেলা ব্যাপী গন আন্দোলন গড়ে তুলবে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘অনেকে পন্ডিতি করে বলবেন বই ফিরিয়ে নেওয়া যায় না। তাদের উদ্দেশ্যে জানাই ইতিমধ্যেই তৃতীয় শ্রেনীর ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বইটি বিতরণের পরেও ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে বোর্ডের নির্দেশক্রমে। তাহলে হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বইটিতে এতোবড় ত্রুটি থাকার পরেও কেনো ফিরিয়ে নেওয়া হবে না? জাতির কাছে প্রশ্ন রইলো ।’।