মনীষা মুখার্জী,কলকাতা,০৩ ডিসেম্বর : অভিনয়ের যেকোনো মাধ্যম সেটা চলচ্চিত্র, ধারাবাহিক, নাটক বা যাত্রা যাইহোক না কেন দর্শকের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে অনিবার্য ভাবে থাকেন কাহিনীর দুই প্রধান চরিত্র নায়ক-নায়িকা। তাদের নিয়েই আবর্তিত হয় দর্শকদের ভাল লাগা, মন্দ লাগা। অনেকেই তাদের সঙ্গে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করে ফেলেন। কিন্তু এমন কিছু চরিত্র থাকেন যারা নিজেদের অভিনয়ের গুণে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। তার উপস্থিতি দর্শকদের উদ্বেল করে তোলে।
এই মুহূর্তে বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে চলছে একাধিক ধারাবাহিক। সন্ধ্যা হলেই বাঙালি ধারাবাহিক ভক্তরা বসে পড়েন টিভির সামনে। এদের মধ্যে কোনো কোনো ধারাবাহিক দর্শকদের কাছে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নায়ক-নায়িকাদের নাম না জানা থাকলেও তাদের অভিনীত চরিত্রের নামগুলো ফেরে দর্শকদের মুখে মুখে। চায়ের টেবিলে বসে তাদের নামগুলো হয়ে ওঠে তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু। অনেক নেগেটিভ অর্থাৎ ভিলেন চরিত্রও দর্শকদের মনে জায়গা করে নেয়।
এরকমই একটি চরিত্র হলো জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ওগো নিরুপমা’-র হ্যারি অর্থাৎ অনুজিত সরকার। আবির-নিরুপমা এবং এনা-অরূপের কাহিনীতে দর্শক মজে গিয়েছিল। হঠাৎ গল্পের প্রয়োজনে হাজির সৌম্যদর্শন হ্যারি। ভাবা হয়েছিল রোমান্টিক কাহিনীর মধ্যে ‘পদ্মবনে মত্ত হাতি’ হ্যারিকে হয়তো দর্শক মেনে নেবেনা। কিন্তু ঘটে গেল উল্টো। নেগেটিভ হলেও হ্যারির চরিত্রে অনুজিতের স্বাভাবিক অভিনয় দর্শকদের মনে যথেষ্ট ছাপ ফেলে।
যখন দর্শক ভাবতে শুরু করছিল এবার অনেক ধারাবাহিকে দেখা যাবে তাদের প্রিয় শিল্পীকে তখনই ঘটে গেল ছন্দপতন। বিভিন্ন চ্যানেলে একের পর এক ধারাবাহিক দেখা গেলেও কোনোটাতেই দেখা যাচ্ছেনা ভক্তদের হ্যারি অর্থাৎ অনুজিতকে। অথচ তার উপস্থিতিটা হতো স্বাভাবিক ঘটনা। হ্যারির চরিত্রে তার অভিনয় দর্শকদের মনে যথেষ্ট ছাপ ফেলে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পর্দায় তার উপস্থিতি নায়ক-নায়িকাকেও ম্লান করে দেয়। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে – তাহলে অনুজিত কি লবিবাজীর শিকার?
কথা হচ্ছিল ব্যাণ্ডেলের রিণ্টি মুখার্জ্জীর সঙ্গে। তিনি বললেন,’আমি নিয়মিত সিরিয়াল দেখি। হ্যারির চরিত্রে যিনি অভিনয় করছিলেন খুব ভাল লাগছিল। ভেবেছিলাম আরও হয়তো কিছু সিরিয়ালে তাকে দেখতে পাব। কিন্তু সেই ইচ্ছে পূরণ হয়নি। তার মত অনেক হ্যারি ভক্তদের মনে এটা নিয়ে একটা আক্ষেপ থেকে গেছে।’
এক শ্রেণির দর্শকের নয়নের মণি হ্যারি ওরফে অনুজিত সরকার বললেন,’ভাল অভিনয় করেও সুযোগ পাচ্ছিনা বলে আমার কোনো অভিযোগ নাই। আমি জানি সুযোগ আসবেই। আমার মত পরিস্থিতি অনেকের জীবনে হয়েছে। এখন স্ট্র্যাগেল করে যাচ্ছি। যেদিন সুযোগ পাব সেদিন আবার নিজেকে উজাড় করে দেব। তবে তিনি কেবল ‘হ্যারি’তেই নিজেকে আটকে রাখতে চাননা। বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরতে চান।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নির্দেশক বললেন, ‘ছেলেটা সত্যিই ভাল অভিনয় করে। আশাকরি ধারাবাহিক জগতের নোংরা রাজনীতির শিকার সে হবেনা।’
একদিকে সুযোগের অপেক্ষায় আছেন ‘হ্যারি’ অনুজিত। অন্যদিকে অপেক্ষায় আছেন রিণ্টিদের মত অসংখ্য ‘হ্যারি’ ভক্ত। সবার আশা খুব শীঘ্রই তাদের আশা পূরণ হবে।।