এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৯ ডিসেম্বর : টিকটকে পরিচয় থেকে গভীর সম্পর্ক। তারপর নিকাহ । কিন্তু নিহাহের পাঁচ মাস পরেই তালাক । পরে আবারও প্রাক্তন স্বামীর সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে ফের নিকাহের সিদ্ধান্ত । কিন্তু মাদ্রাসা শিক্ষিকা তানিয়া খাতুন এবং একই মাদ্রাসার রাঁধুনি আরিফ মিয়ার শেষ পর্যন্ত আর বিয়ে হয়নি। তার আগেই ঢাকার কেরানীগঞ্জের তানিয়াকে খুন করল আরিফ। গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে খুনের কথা সে কবুলও করেছে ।
কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের ঝাউচর এলাকায় এক দু’তলা বাড়ির নিচের তলার একটি ঘর থেকে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর ২০২৩) রাতে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তানিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ।শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় তানিয়াকে- এমন সন্দেহের পর শুরু হয় তদন্ত । শেষে পাশের বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা মেলে সন্দেহজনক একজনকে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্তের পর গ্রেফতার করা হয় আরিফ মিয়াকে।
আরিফ পুলিশকে জানিয়েছে,সে তানিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যার পর পালিয়ে গিয়েছিল । ছয় মাস আগে টিকটকে পরিচয় হয়েছিল তাদের। পরে প্রেম। তারপর বিয়ে। তানিয়া একটি মাদ্রাসার শিক্ষিকা ছিলেন, সেই মাদ্রাসার বাবুর্চি ছিলেন আরিফন।
বিয়ের পাঁচ মাস পরেই ডিভোর্স হয়ে যায় তাদের মধ্যে। কিছুদিন পরেই আবারও তাদের মধ্যে যোগাযোগ হয়। পুনরায় তারা বিয়ে করতে চান। ঘটনার একদিন আগেই তারা ঝাউচরের ভাড়া বাড়িতে উঠেছিল দু’জনে । কিন্তু ঘটনার দিন কোনো কারনে তাদের মধ্যে বচসা হয় । আর তার মাঝেই তানিয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যাকে তারই একটা ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়ে চম্পট দেয় আরিফ ।
কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর বলেন,সোশ্যাল মিডিয়ায় তানিয়ার সঙ্গে যার ঘনিষ্ঠতা ছিল, সেই ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছিল । পরবর্তীকালে দেখা যায় যে তার মোবাইলটা বন্ধ । তখন আমাদের সন্দেহ আরও বেশি দৃঢ় হয়। এরপর বন্ধ মোবাইলের সূত্র ধরে আশকোনা থেকে আরিফ নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে । জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে ।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর আরও বলেন,’বিয়ের পর আরিফ তার গ্রামের বাড়িতে তানিয়াকে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তানিয়া সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহের কারণে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে তানিয়া আবার আরিফকে বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। এক পর্যায়ে আরিফ আবার তানিয়ার কাছে ফেরত আসেন। কিন্তু তানিয়া তখন তাকে বলেন, তাকে বিয়ে করতে হবে। সেইসঙ্গে তার শর্ত অনুযায়ী সংসার করতে হবে। সেই কথার সূত্র ধরে আরিফ উত্তেজিত হয়ে তানিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরবর্তীকালে তার ওড়না দিয়ে গলা পেঁচিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে আরিফ ।।