জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),২৮ ডিসেম্বর : উড়িষ্যার ভুবনেশ্বরের বাসিন্দা বেচারা বৃদ্ধ অশোক দাস। আয়ের বিকল্প উপায় না থাকার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে সাপ খেলা দেখাত। কেউ দিত অর্থ, কেউ দিত চাল। এইভাবেই তার কোনো মতে সংসার চলে। কিন্তু সে জানতনা সাপ সহ বেশ কিছু বন্যপ্রাণী নিয়ে খেলা দেখানো বর্তমানে নিষিদ্ধ। এই না জানাটাই তার জীবনে অভিশাপ হয়ে নেমে এল। গত ২৭ ডিসেম্বর যথারীতি একটি অজগর সাপ নিয়ে তিনি আসানসোলের কুমারপুর তিলাবাদ এলাকার বিভিন্ন জায়গায় খেলা দেখাচ্ছিলেন। সাপ খেলা দেখতে আসা জনতা চাল ও অর্থ দিচ্ছিল। এই পর্যন্ত সবই ঠিক ছিল।
কোনো এক জায়গায় সাপ খেলা চলাকালীন হঠাৎ বিপত্তি ঘটে যায়। নিষিদ্ধ প্রাণী নিয়ে খেলা দেখানোর খবর পেয়ে স্থানীয় বনদপ্তর থেকে কয়েকজন কর্মী সেখানে এসে উপস্থিত হন। তারা সাপটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় এবং ভবিষ্যতে সাপ নিয়ে খেলা না দেখানোর জন্য অশোক বাবুকে পরামর্শ দেন। চোখের সামনে আয়ের একমাত্র উৎসকে নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য কান্নায় ভেঙে পড়েন বৃদ্ধ অশোক দাস।
কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধ অশোক দাস বললেন,’বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে সাপ খেলা দেখিয়ে যে অর্থ ও চাল উপার্জন হয় তাতেই তার কোনোমতে সংসার চলে। বাড়িতে আছে চারটি বিবাহযোগ্যা কন্যা। কাল থেকে তাদের মুখে কীভাবে একমুঠো খাবার তুলে দেব সেটা ভেবে চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি।’ স্থানীয় বনদপ্তরের কর্মী রজত চ্যাটার্জ্জী বললেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা সাপটি উদ্ধার করেছি। কিছুক্ষণ নজরে রেখে সেটি গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেব।’ বন্যপ্রাণীদের সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতনতার তারা ভূয়সী প্রশংসা করেন ।।