এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইন্দোনেশিয়া,২৮ ডিসেম্বর : মিয়ানমার থেকে কাতারে কাতারে রোহিঙ্গা ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশ, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মত দেশগুলিতে । কিন্তু রোহিঙ্গাদের মধ্যে সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িয়ে পরার প্রবনতার কারনে ওই সমস্ত দেশগুলিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠছে৷ ফলে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসনের দাবি উঠছে দীর্ঘদিন ধরে । বুধবার ইন্দোনেশিয়ার বান্দা আচেহ শহরে ছাত্রদের বিশাল দল মিয়ানমার থেকে আসা শত শত রোহিঙ্গা শরণার্থীকে প্রত্যাবসনের দাবিতে তাদের অস্থায়ী আশ্রয়স্থল একটি কনভেনশন সেন্টারে হামলা চালিয়েছে ।
বিক্ষোভকারী ইন্দোনেশিয়ান পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকেই ছিল সবুজ জ্যাকেট পরা। তাদের রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী আশ্রয়স্থল একটি কনভেনশন সেন্টারের দিকে ছুটে যেতে দেখা গেছে । পড়ুয়াদের মারমুখী রূপ দেখে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের মেঝেতে বসে ভয়ে কান্নাকাটি করতে দেখা যায় । বাধ্য হয়ে স্থানীয় পুলিশ রোহিঙ্গাদের সেখান থেকে বের করে নিয়ে যায় । জিনিসপত্র প্লাস্টিকের বস্তায় বহন করে ও ট্রাকে করে তাদের বিকল্প আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ।
প্রসঙ্গত,ইসলামি রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ইন্দোনেশিয়ায় ক্রমবর্ধমান প্রতিকূলতা এবং প্রত্যাখ্যানের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে। কারণ স্থানীয়রা জাতিগোষ্ঠীগত সংখ্যালঘুদের নৌকাতে করে সেখানে নিয়ে আসার ঘটনায় হতাশ হয়ে পড়েছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো রোহিঙ্গাদের আগমনের সাম্প্রতিক এই বৃদ্ধির জন্য মানব পাচারকে দায়ী করেছেন। তিনি এই মানুষদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে যখন সমুদ্র শান্ত থাকে তখন রোহিঙ্গাদের আগমনের প্রবণতা বেড়ে যায়। তারা তখন নৌকায় করে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় যায় । ইন্দোনেশিয়ায় ইউএনএইচসিআর-এর একজন মুখপাত্র বুধবারের ঘটনায় মন্তব্য করার জন্য সংবাদ মাধ্যমের তরফে অনুরোধ করা হলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কোনো জবাব দেননি।
ইন্দোনেশিয়া ১৯৫১ সালের ইউনাইটেড নেশন্স কনভেনশন অন রিফিউজিতে স্বাক্ষরকারী নয়, কিন্তু দেশটিতে শরণার্থী এলে তাদেরকে গ্রহণ করার ইতিহাস আছে। ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গারা ব্যাপক হারে মিয়ানমার ত্যাগ করছে । ইন্দোনেশিয়ায় তারা সাধারণত দক্ষিণ এশিয়া থেকে আসা ভিনদেশী হিসেবে বিবেচিত হয় ।।