এইদিন ওয়েবডেস্ক,রোম,২২ ডিসেম্বর : খুড়তুতো দাদাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করায় নিজের ১৮ বছরের মেয়েকে খুনের অভিযোগে পাকিস্তানি দম্পতিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে ইতালীর আদালত । হত্যাকাণ্ডে যুক্ত মেয়েটির এক কাকাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে । মৃত মেয়েটির নাম সামান আব্বাস (Saman Abbas) । পুলিশ মেয়েটির বাবা শব্বর আব্বাস (Shabbar Abbas) ও কাকা দানিশ হাসনাইনকে(Danish Hasnain) গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও মা নাজিয়া শাহীন (Nazia Shaheen) এখনো বেপাত্তা ।
সামান আব্বাস (Saman Abbas) এবং তার বাবা-মা ইতালির বোলোগনার(Bologna) কাছে নভেলারায় (Novellara ) থাকতেন । তার বাবা-মা চেয়েছিলেন যে সে পাকিস্তানে একজন খুড়তুতো দাদাকে বিয়ে করুক। কিন্তু ১৮ বছর বয়সী সামান আব্বাস তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে এবং ২০২১ সালে হঠাৎ সে নিখোঁজ হয়ে যায় ।
মধ্য ইতালির একটি আদালত রায় দিয়েছে যে খুড়তুতো দাদাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করার অপরাধে সামান আব্বাসের বাবা-মা তাদের মেয়েকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল এবং তার এক কাকা তার ভাইঝিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল। প্রধান হত্যাকারী মেয়েটির কাকা হলেও তাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়, আর একটি মামলায় দুই খুড়তুতো ভাইকে খালাস দেওয়া হয়।
জানা গেছে,খুড়তুতো দাদাকে বিয়ের বিষয়ে সামান আব্বাস ২০২০ সালের নভেম্বরে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিল । মেয়েটির নিরাপত্তার কথা ভেবে তাকে এক সমাজকর্মীর আশ্রয়ে রাখা হয় । পরের বছর প্রেমিকের সাথে নতুন জীবন শুরু করার জন্য ২০২১ সালের এপ্রিলে মেয়েটি তার পাসপোর্ট নিতে এবং বাবা-মাকে বিয়ের কথা জানাতে তার বাড়ি গিয়েছিল । আর তারপরেই নিখোঁজ হয়ে যায় সামান আব্বাস । তার প্রেমিকের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ মেয়েটির বাড়িতে অভিযান চালায়, তবে তার আগেই মেয়েটির বাবা-মা পাকিস্তানে চলে পালিয়ে যায় ।
এরপর পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখলে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে কিছু সরঞ্জাম নিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে দেখে এবং প্রায় আড়াই ঘন্টা পরে তাদের বাড়ি ফিরে আসতে দেখা গেছে। এর এক বছর পর ফার্মহাউস থেকে সামান আব্বাসের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ । মেয়েটির গলার হাড় ভাঙা অবস্থায় ছিল । পুলিশ জানিয়েছে,২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে পয়লা মে-এর মধ্যে মেয়েটিকে খুন করে ফার্মহাউসে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল ।
মেয়েটির ভাই পুলিশকে বলেছিল যে তার দিদিকে হত্যা করার পরিকল্পনার সময় তার বাবা,মা ও কাকার কথোপকথন সে শুনতে পেয়েছিল । তার কাকাই তার দিদিকে হত্যা করেছে। বাবা শব্বর আব্বাসকে পাকিস্তানে গ্রেপ্তার করে চলতি বছরের আগস্টে ইতালিতে হস্তান্তর করা হয় ৷ কাকা দানিশ হাসনাইনকে ফরাসি কর্তৃপক্ষ জেলে পাঠায় । মেয়েটির খুড়তুতো দাদারা স্পেনে গ্রেফতার হলেও মা নাজিয়া শাহীন এখনো পলাতক ।।