এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইসলামাবাদ,২১ ডিসেম্বর : পাকিস্তানের এক খ্রিস্টান কিশোরসহ দু’জনকে ধর্মনিন্দার মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিল সেদেশের আদালত । হতভাগ্য ওই কিশোরের নাম শাহজাদ মসিহ (Shahzad Masih) । শাহজাদকে যখন মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর । মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্যজন হলেন আশফাক মসীহ(Ashfaq Masih)। তারা দু’জনেই বর্তমানে কারাগারে মৃত্যুর প্রতীক্ষায় দিন গুনছেন ।
ফারাজ পারভেজ নামে এক ব্যক্তি আশফাক মসীহের একটি ভিডিও ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছেন । আশফাকের হাতে হাতকড়া লাগানো অবস্থায় দেখা গেছে । যে ব্যক্তি ভিডিওটি রেকর্ড করেছিল তাকে রুক্ষ ভাষায় আশফাকের সঙ্গে কথা বলতে শোনা গেছে । আশফাক ক্যামেরার সামনে কাঁদতে কাঁদতে তার মুক্তির জন্য কাতর আবেদন জানান । ফারাজ পারভেজ ভিডিওর সঙ্গে লিখেছেন, ‘ইনি একজন খ্রিস্টান ব্যক্তি । যিনি বলেছিলেন ‘যীশু সর্বোচ্চ’ । আর তার এই অপরাধের জন্য ‘ধর্মনিন্দার’ অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে ।’ আসল ঘটনার বিবরণে তিনি লিখেছেন,’আশফাক মসীহ একজন সাইকেল মেরামতের মেকানিক । তিনি তার মুসলিম গ্রাহকের কাছে সাইকেল মেরামতের পারিশ্রমিক বাবদ ৩৫-৪০ টাকা চেয়েছিলেন । তার খরিদ্দার মুহাম্মদ ইরফান (Muhammad Irfan)বলেছেন তিনি আশিক ই রসুল । মসিহ শুধু তার উপার্জন চেয়েছিলেন। এজন্য মুহাম্মদ ইরফান তার বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দার মিথ্যা অভিযোগ করেছিলেন । লাহোর হাইকোর্ট ২০২২ সালে আশফাককে মৃত্যুদণ্ড দেয় এবং তিনি এখনও কারাগারে রয়েছেন ।’
অন্যদিকে শাহজাদ মসিহ নামে ওই খ্রিস্টান কিশোরের বিরুদ্ধে একটি কট্টরপন্থী মুসলিম সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ধর্মনিন্দার মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিল । তখন তার বয়স ছিল ১৬ বছর । এখন তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে । শাহজাদ মসিহকে মুক্তির দাবিতে খ্রিস্টান গোষ্ঠীর তরফে সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে,’আমরা তার প্রতিনিধিত্ব করতে এবং তার মামলার আপিল করার জন্য পাকিস্তানের মাটিতে আমাদের আইনি দলকে একত্রিত করেছি । আমাদের অবশ্যই ন্যায়বিচারের এই জঘন্য নির্দেশ উল্টে দিতে হবে। এটি চূড়ান্ত জঘন্য মানবাধিকার লঙ্ঘন, এবং আমরা এই মামলাটি পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যাব।
আমরা খ্রিস্টানদের সাহায্য করেছি – যেমন এর আগে খ্রিস্টান মা আসিয়া বিবিকে একই বর্বর আইনে অভিযুক্ত করা হয়েছিল । পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ড থেকে তাদের বাঁচাতে আমরা আপনাদের ছাড়া এটি করতে পারি না। তাদের বিশ্বাসের জন্য কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত নয় । এটাই আমাদের রুখে দাঁড়ানোর সময় ।’।