দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২১ ডিসেম্বর : ধান কাটার কাজ করার জন্য ভোর রাতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল এক যুবক । সেই সময় মার্বেল পাথর বোঝাই বেপরোয়া লরির ধাক্কায় মৃত্যু হল তার । মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে আজ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার ভুমশোর বাসস্ট্যান্ডের কাছে বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কে । খবর পেয়ে যুবকের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে মৃতের নাম শেখ হাসিবুল (২২) । তার বাড়ি ভাতার থানার ভুমশোর গ্রামে । পাশাপাশি আটক করা হয়েছে ঘাতক লরিটিও । মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,ভুমশোর গ্রামের মাঝের পাড়ার বাসিন্দা শেখ আইনুল হক ও ববি বেগমের তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় হাসিবুল । আইনুল হকের মেজ মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী । ছোট ছেলে সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে । আইনুল হক ও তার বড় ছেলে শেখ হাসিবুল মিলে খেতমজুরের কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালাতেন ।
জানা গেছে,মাঠে ধান কাটার কাজ করতে যাওয়ার জন্য আজ ভোর রাত একটা নাগাদ বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে বের হয়েছিলেন হাসিবুল । তিনি ভুমশোর বাসস্ট্যান্ড থেকে বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়ক ধরে ভাতারের মুখে জমির উদ্দেশ্যে রওনা হন । সেই সময় পিছন থেকে আসা একটি মার্বেল পাথর বোঝাই লরি বেপরোয়া গতিতে এসে তাকে ধাক্কা দেয় । ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের । এদিকে লরি ফেলে চম্পট দেয় চালক ও খালাসি । পরে ভোর তিনটে নাগাদ হাসিবুলের মৃত্যুর খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে আসে হাসিবুলের পরিবার ।
মৃতের কাকা শেখ নজরুল হক বলেন,’ভাতার থানার মাহাতা এলাকায় বিয়ে ঠিক হয়েছিল হাসিবুলের । তার মেজ বোনেরও বিয়ে ঠিক হয়েছিল । ঈদের পর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তাদের । কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল ।’ তিনি আরও বলেন,’অত্যন্ত হতদরিদ্র পরিবার হাসিবুলদের । তার বাবার বয়স হয়েছে,তিনি বিশেষ কাজকর্ম করতে পারেন না । মূলত হাসিবুলের উপার্জনেই পাঁচজনের সংসার চলত । এই মর্মান্তিক ঘটনার পর গোটা পরিবারটা অসহায় হয়ে পড়েছে ।’।