জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,কলকাতা,১৬ ডিসেম্বর :প্রায় সাত বছর আগে মেয়ের অকাল মৃত্যু জন্মদাতা পিতার মাথায় বজ্রপাতের মত আঘাত করে হৃদয়ে সৃষ্টি করে আজীবন যন্ত্রণা। নিজেকে সম্পূর্ণ আড়ালে রেখে ‘ক্ষ্যাপা খুঁজে ফেরে পরশ পাথর’-এর মত সমাজ সেবার মাধ্যমে মেয়ের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য মরিয়া চেষ্টা করেন হাওড়ার আন্দুলের কন্যাহারা পিতা। পাশে পেয়ে যান ‘জন চেতনা’-র মত স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে।
গত ১৪ ডিসেম্বর মৃত মেয়ে মৌমিতার জন্মদিন ছিল। দিনটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় কলকাতার পিজি হাসপাতালের ‘শেডে’ একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক শাখার সহযোগিতায় শিবির থেকে প্রায় ২০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়। এদের মধ্যে দু’জন ছিলেন মহিলা। সংগৃহীত রক্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট কন্যা রক্তদাতাদের হাতে একটি করে মেমেণ্টো ও সার্টিফিকেট তুলে দেন।
রক্তদাতাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ শিবিরে উপস্থিত ছিলেন সোমা কর্মকার, পম্পা রায়, অর্ণব কর্মকার, ডাঃ স্বর্ণালী মল্লিক, সোনালী প্রসঙ্গ মুনমুন দেবনাথ, নমিতা ঘোষ, সৌম্যজিৎ মুখার্জী ও শুভাশীষ বোধক। ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবিকা বগুলা ‘রেনেসাঁ’-র অপর্ণা বিশ্বাস এবং সমাজসেবক ‘জনচেতনা সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’-এর দেবাশীষ দাস।
প্রসঙ্গত,বছর সাতেক আগে মৌমিতার অকাল মৃত্যু হয় । তারপর থেকে মেয়ের জন্মদিনে পিতা নিজের সাধ্যমত সমাজসেবার কাজ করে যান। তার ইচ্ছেপূরণ করার জন্য প্রথম দিন থেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ‘জন চেতনা’-র সদস্যরা।স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে সম্পাদক শুভাশীষ বোধক বললেন – উনি আমাদের পাড়ার মানুষ। ‘মেঘনাদ’-এর মত মেঘের আড়ালে থেকে উনি নিজের সাধ্যমতো গরীব মানুষের পাশে থাকেন। এরকম একজন মানুষকে পাশে পেয়ে আমরা গর্বিত।
মৃতা মৌমিতার বোন বললেন,’দিদি আর কোনোদিনও ফিরবে না সেটা আমরা জানি। আমার বাবা সবার মাঝেই দিদির স্মৃতি খুঁজে বেড়ান। সমাজ সেবার মাধ্যমে ভোলার চেষ্টা করেন কন্যা হারানোর যন্ত্রণা। এটাই ওনার একমাত্র ‘প্যাশন’।’।