এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,১৪ ডিসেম্বর : বুধবার সংসদে ‘স্মোক বোমা’ হামলার মূল পরিকল্পনাকারীকে চিহ্নিত করেছে দিল্লি পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে,হামলার মাস্টারমাইন্ড ললিত ঝা পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা এবং সে পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক । হামলার ঘটনার সময় ওই শিক্ষক সংসদ ভবনের বাইরে থেকে ভিডিও শুট করছিল। যদিও পুলিশের ধরপাকড় শুরু হতেই সে চম্পট দেয় । পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে । দিল্লি পুলিশ বলছে, অভিযুক্তরা জানুয়ারি থেকেই পরিকল্পনা শুরু করেছে। বর্ষা অধিবেশনের অন্যতম অভিযুক্ত মনোরজ্ঞন সংসদে প্রবেশ করে নজরদারি চালান। সবাই জাস্টিস ফর আজাদ ভগত সিং ফেসবুক গ্রুপের সদস্য।
মোট ৪ জন হামলায় অংশ নেয় । তার মধ্যে সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন নামে দুই হামলাকারী লোকসভায় প্রবেশ করেছিল । বাকি দু’জন নীলম ও আনমোল শিন্ডে সংসদ ভবনের বাইরে স্মোক বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় । জানা যায়, সংসদের বাইরে ও ভেতরে তোলপাড় সৃষ্টিকারী চার আসামি একে অপরকে চেনেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একে অপরের সংস্পর্শে আসেন ।
লোকসভার ভিতরে স্মোক বোমা আক্রমণ সাগর শর্মা করেছিল। সাগর মহীশূরের বাসিন্দা । সে কর্ণাটকের মহীশূর-কোদাগু লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমার পাস নিয়ে লোকসভার দর্শক গ্যালারিতে পৌঁছোয় এবং দুপুর ১টার দিকে ভিজিটর গ্যালারিতে পৌঁছান। কিছুক্ষণ পরেই দুজনে পাবলিক গ্যালারি থেকে সংসদের চেম্বারে ঝাঁপ দেন, মনোরঞ্জন নামে এক যুবকও ঝাঁপ দেন। সাগর জুতো থেকে একটা স্মোক বোমা বের করে ঘরে ধোঁয়া ছড়িয়ে দেয়, যেখান থেকে হলুদ ধোঁয়া বের হয় । ধোঁয়া দেখে সাংসদরা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যান, কারন সাংসদরা ভেবেছিলেন সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, কিন্তু পরে জানতে পারেন এটা স্রেফ ধোঁয়া হামলা।
দুপুর ১টার দিকে সাগর শর্মা ও মনোরঞ্জন নামে দুই যুবক দর্শক গ্যালারি থেকে লাফ দিয়ে লোকসভার অধিবেশ চলার সময় ঢুকে পড়ে । যদিও সাংসদরা একজনকে ধরে ফেলে এলোপাথাড়ি কিল, চড়, লাথি, ঘুঁষি মারে । অবশ্য একজন হামলাকারী পালিয়ে যায় । সংসদ ভবনের হামলার ঘটনায় ৬ জন জড়িত বলে জানতে পেরেছে তদন্তকারীরা । প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সাগর শর্মা উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা। ডি মনোরঞ্জনের বাড়ি কর্নাটকের মাইশোরে। অন্যদিকে পার্লামেন্টের বাইরে থেকে গ্রেপ্তার হওয়া অমল শিন্ডে মহারাষ্ট্রের লাটুরের বাসিন্দা, একমাত্র মহিলা নীলম আজাদ হরিয়ানার হিসারে থাকতেন । সাগর ও মনোরঞ্জনকেই বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিনহার অফিস থেকে সংসদের দর্শকাসনে বসার পাস ইস্যু করা হয়েছিল ।
বিজেপির আইটির সর্বভারতীয় ইনচার্জ অমিত মালব্য সংসদে হামলার ঘটনায় কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন । তিনি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন,’ক্ষমতা পরিবর্তন বা শাসন পরিবর্তন হল এমন একটি শব্দবন্ধ যা কংগ্রেস নেতারা প্রায়শই ব্যবহার করেন। আজ সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনকারী মহিলা নীলম আজাদের সাথে দেখা করুন। তিনি একজন সক্রিয় কংগ্রেস/আইএনডিআই জোট সমর্থক। তিনি একজন আন্দোলনজীবী, যাকে বেশ কয়েকটি বিক্ষোভে দেখা গেছে।’
তিনি আরও লেখেন,’প্রশ্ন হল তাদের কে পাঠিয়েছে? কেন তারা মহীশূর থেকে একজন বিজেপি সাংসদের কাছ থেকে সংসদ পাস নেওয়ার জন্য কাউকে বেছে নিল? আজমল কাসাবও মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য একটি তাগা পরেছিল। এটাও একই ধরনের চাল।মনে রাখবেন বিরোধীরা কিছুতেই থামবে না, এমনকি আমাদের গণতন্ত্রের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান সংসদকেও অপবিত্র করতে ছাড়বে না।’।