এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১১ ডিসেম্বর : ছেলে সেজে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার খেড়ুর গ্রামের ১৪ বছরের এক কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভিন রাজ্যে পাচারের চেষ্টার মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড় নিয়েছে । কিশোরীকে বীরভূমের পাঁরুই এলাকার বাসিন্দা ধৃত তরুনী গীতা দাসের (১৯) বাড়ি থেকে পুলিশ উদ্ধার করার পর থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে । প্রথমে তাকে ভাতার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । পরে শারিরীক অবস্থার হওয়ায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। কিন্তু রবিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মেয়েটির ।
মৃতার বাবা বলেন,’পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার করে আনার পর থেকেই মেয়ে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে । ওকে প্রথমে ভাতার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই । শুক্রবার বর্ধমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল । তখনই বর্ধমান হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান যে আমার মেয়ের বিষক্রিয়া হয়েছে । এরপর আমি মেয়েকে জিজ্ঞাসা করি । তখন মেয়ে আমাদের বলেছিল পুলিশ উদ্ধার করে আনার আগে গীতা দাস আমার মেয়েকে জোর করে ঠাণ্ডা পানীয়ের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে খাইয়ে দিয়েছিল।’ তাঁর সন্দেহ, ধৃত তরুনী গীতা দাস ঠাণ্ডা পানীয়ের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল ।
জানা গেছে,ভাতার থানার খেড়ুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত কিশোরী অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল । সে বাবা- মায়ের একমাত্র সন্তান । বীরভূমের পাঁরুই এলাকার বাসিন্দা গীতা দাসের সঙ্গে তার সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় হয় । গীতা নিজেকে ছেলে বলে পরিচয় দেয় । ছেলেদের মত গড়ন ও স্বভাবের কারনে কিশোরী তাকে ছেলে বলেই মনে করেছিল । আর কিশোরীর সেই সরলতার সুযোগ নিয়ে কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে । সপ্তাহ খানেক আগ আগে বাড়ি থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায় কিশোরী । পরের দিন পরিবারের লোকজন ভাতার থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করলে কিশোরীকে উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করে পুলিশ । শেষে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ দেওয়ানদিঘি থানার পাঁরুই এলাকায় মেয়েটির অবস্থান জানতে পারে । গত বুধবার কিশোরীকে উদ্ধার করে আনা হয় । পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয় গীতা দাসকে । প্রথমে পুলিশেরও সন্দেহ ছিল যে কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার পিছনে কোনো ছেলের হাত আছে । কিন্তু গীতাকে গ্রেফতারের পরেই পুলিশ জানতে পারে যে সে আদপে একজন মেয়ে ।
বর্তমানে সে জেল হেফাজতে রয়েছে ধৃত তরুনী । আর এর মাঝেই খেড়ুর গ্রামের ওই কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর তরুনীর বিরুদ্ধে উঠছে খুনের অভিযোগ । মৃতার শোকস্তব্ধ পরিবার পরিজন ও গ্রামবাসীদের দাবি ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করে গীতা দাসকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক । এদিকে মৃতা কিশোরীর ময়নাতদন্ত হয়ে গেলেও তার রিপোর্ট না আসায় মেয়েটিকে বিষ প্রয়োগের বিষয়ে নিশ্চিত নয় পুলিশ । পাশাপাশি আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত ধৃত তরুনীর বিরুদ্ধে নতুন করে কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানা গেছে ।।