এইদিন ওয়েবডেস্ক,চট্টগ্রাম,১১ ডিসেম্বর : বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা, সম্পত্তি জবরদখল, খুন, ঘরবাড়ি ও দোকানে অগ্নিসংযোগ,মন্দির,দেবদেবীর মূর্তি ভাঙচুর,হিন্দু মেয়েদের লাভ জিহাদে ফাঁসিয়ে ধর্মান্তরিত করার ঘটনা প্রায় প্রতিদিনই শুনতে পাওয়া যায় । এবারে শিক্ষাঙ্গনেও চরম বৈষম্যের শিকার হল ইসলামি রাষ্ট্র বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা । চট্টগ্রামের একটি সরকারি স্কুলে অমুসলিম পড়ুয়ারা ভর্তি হতে পারবে না বলে স্কুলে ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ । ঘটনাকে ঘিরে বাংলাদেশের হিন্দুদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে । হিন্দুদের তরফে কোনো তাদের জন্য পৃথক স্কুল নির্মানের দাবি তোলা হচ্ছে ।
চট্টগ্রামের ‘সম্মিলিত অবিভাবক ও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’-এর পক্ষ থেকে ছাপা একটি ব্যানার ওই স্কুলে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে । তাতে লেখা হয়েছে, ‘চট্টগ্রামের সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না অমুসলিম পড়ুয়ারা । স্কুলে নোটিশ টাঙিয়ে দিল স্থানীয় মুসলিমরা । শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । চট্টগ্রাম ঐতিহ্যবাহী সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের ভর্তির লটারিতে অমুসলিম ছাত্রদের অংশগ্রহণের অন্তর্ভুক্ত না করার আহ্বান জানাচ্ছি । সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে শুধুমাত্র মুসলিম ছাত্রদের জন্য সংরক্ষিত একটি প্রতিষ্ঠান । নিবেদক : সম্মিলিত অবিভাবক ও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ।’
ব্যানারটির ছবি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়েছে । সংগঠনটি এর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছে, ‘সরকারী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে আমরাও আমাদের সন্তানদের পাঠাতে চাই না, যদিও বিদ্যালয়টি একজন হিন্দুর দান করা ভূমির উপরে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের সন্তানদের জন্য সরকারী হিন্দু উচ্চ বিদ্যালয় নির্মান করে দেয়া হোক। এছাড়াও এধরনের একটা সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় বিদ্বেষপূর্ন দাবীর দাবীদার তথাকথিত “সম্মিলিত অভিভাবক ও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ” হয় কিভাবে। কারন ঐ স্কুলে বর্তমানে ৪০% শিক্ষার্থীই তো হিন্দু ধর্মাবলম্বী পাঠরত আছে। তারা এবং তাদের অভিভাবকরা নিশ্চয় এই দাবীর পক্ষে নাই। তাহলে দাবীটা সম্মিলিত অভিভাবক ও ছাত্রদের হয় কিভাবে ?’
টিটু ভৌমিক নামে এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মজার বিষয় হলো এ স্কুলটা রাজা রায় বাহাদুর রাজ চন্দ্র ঘোষের জমি দখল করে তৈরি করা।এখন যদি বাংলাদেশের নামকরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা, আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ময়মনসিংহ, বরিশাল বিএম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (ব্রজমোহন কলেজ),সিলেট এম সি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ(মুরারি চাঁদ কলেজ),গুরুদয়াল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কিশোরগঞ্জ,রণদাপ্রসাদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ নারায়ণগঞ্জ,সরকারি তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ নারায়ণগঞ্জ, সরকারি বিএল কলেজ খুলনা(ব্রজলাল কলেজ) ছাড়াও বাংলাদেশের সমস্ত স্বনামধন্য হিন্দু স্কুল কলেজ গুলোতে শুধুমাত্র হিন্দু শিক্ষার্থীদের ভর্তির দাবি করা হয় তখন সাম্প্রদায়িকতার বাণী ঠিক থাকবে তো ! আর খ্রিস্টানদের নটরডেম, হলিক্রস, ভিকারুননিসা,সেন্ট জোসেফ এর মত দেশ সেরা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শুধুমাত্র খ্রিস্টান শিক্ষার্থী ভর্তির দাবি তোলা হয় তাহলে কেমন হবে!’
অ্যাডভোকেট সঞ্জীব সাহা সুবোধ এই ধরনের সাম্প্রদায়িক মানসিকতার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘দ্বিজাতিতেত্ত্বর বিষবৃক্ষ রোপণকারীদের বাংলাদেশে গনতন্ত্র লালান কারী হিসাবে ঘৃনা জানাই ।’।