এইদিন ওয়েবডেস্ক,১০ ডিসেম্বর : ভারতে রামমন্দির বিতর্ক দীর্ঘদিনের ৷ শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্মান হয়েছে রামমন্দির । আগামী বছর জানুয়ারীতে মন্দিরের শুভ উদ্বোধন হবে । কিন্তু মুঘল হানাদার বাবর যখন অযোধ্যার রামজন্মভূমি দখল করতে আসে তখন কি ভূমিকা ছিল স্থানীয় হিন্দুদের ? বিনা প্রতিরোধেই কি অযোধ্যার রামমন্দির দখল করে বাবরি মসজিদ নির্মান করেছিল হানাদাররা ? অবশ্যই না । মুঘল হানাদারদের পড়তে হয়েছিল হিন্দুদের কঠোর প্রতিরোধের মুখে । কথিত আছে, মন্দির রক্ষায় মুঘল হানাদারদের বিরুদ্ধে ভীষণ লড়াই করেছিল হিন্দুরা । সেই যুদ্ধে অন্তত ১,৭৪,০০০ মানুষের প্রাণহানি হয় । পণ্ডিত দেবীদীন পান্ডে (Pandit Devi Deen Pandey) নামে এক ব্রাহ্মণ একাই ৭০০ মুঘলের নরসংহার করেছিলেন ।
পণ্ডিত দেবী দীন পান্ডে ছিলেন ১৬ শতকের হিন্দু যোদ্ধা সাধক, যিনি অযোধ্যার মন্দির রক্ষার জন্য মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাকির বিরুদ্ধে ভীষণ যুদ্ধ করেছিলেন । স্বাধীন ভারতের তথাকথিত সেকুলার তথা মুঘল প্রেমী সরকার ওই মহান হিন্দু বীরকে ইতিহাসের পাতায় জায়গা না দিলেও বংশানুক্রমিক ভাবে লোক মুখে দেবী দীন পান্ডের বীরত্বের কাহিনী প্রচারিত হয়ে আসছে ।
শোনা যায়,পণ্ডিত দেবী দীন পান্ডে অযোধ্যার সানেথু গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন । তিনি একটি সর্যুপরিণ ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন । তিনি একজন আচারিক পুরোহিত ছিলেন কিন্তু মুঘল সেনাবাহিনী যখন রাম মন্দির ভেঙ্গে দেওয়ার লক্ষ্যে অযোধ্যার দিকে অগ্রসর হয়, তখন পণ্ডিত দেবীদীন পান্ডে পুরোহিতের কাজ ছেড়ে দেন । এলাকার ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয়দের একজোট করে গড়ে তোলেন প্রতিরোধ বাহিনী । পণ্ডিত দেবী দীন পান্ডের নেতৃত্বে হিন্দুরা মুখোমুখি হয় বাবরের সেনাপতি মীর বাকির । ভীষণ যুদ্ধ শুরু হয় । পণ্ডিত দেবী দীনে নিজ হাতে ৭০০ মুঘলকে নিকেশ করেন ।
একজন মুঘল সৈন্য পন্ডিতজির পিছন থেকে এসে এমনভাবে তরবারি দিয়ে তাকে আক্রমণ করে যে পণ্ডিতজির মাথা দু’ফালা হয়ে যায় । কিন্তু গামছা দিয়ে মাথা বেঁধে যুদ্ধ শুরু করেন পণ্ডিত দেবী দীন পান্ডে এবং শেষ পর্যন্ত একের পর এক মুঘল সৈন্যদের আক্রমণে গুরুতর আহত হয়ে যুদ্ধস্থলেই তিনি শহীদ হন । পণ্ডিত দেবী দীন পান্ডের সেই বীরত্বের কাহিনী আজও লোকমুখে প্রচারিত হয় অযোধ্যায় । সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুরে পণ্ডিত দেবী দীন পান্ডেজির একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে । সেই মূর্তির সামনে মাথা নত করে এই হিন্দু ব্রাহ্মণ বীর যোদ্ধাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ।।