দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৯ ডিসেম্বর : কালীপুজোর রাতে ভাতার থানার ওড়গ্রামের দুই মন্দিরে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটে । মন্দিরের একাধিক তালা ভেঙে দেবীর কয়েক লক্ষ টাকার সোনারূপোর গহনা নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা । অবশেষে ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পরে চুরির কিনারা করল পুলিশ । গ্রেফতার হয়েছে কাটোয়া থানার শ্রীখণ্ড গ্রামের বাসিন্দা নন্দন নাথ(৩২) নামে এক দুষ্কৃতী । গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ভাতার থানার ওসি অরুন কুমার সোমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে নন্দনকে বলগোনা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ।
ধৃতের কাছ থেকে নগদ ৫৩ হাজার টাকা, ৬৫ গ্রাম ওজনের একটি রূপোর তৈরি মুণ্ডমালা উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ । পুলিশ আরও জানায় যে ওই দুষ্কৃতী চুরি করা গহনা বিক্রি করে একটি স্মার্টফোন কিনেছিল,ফোনটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । আজ শনিবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে তোলা হলে ধৃতকে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় । ধৃতকে জেরা করে এই চক্রে আর কেউ যুক্ত আছে কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহরায় ।
যে মন্দির দুটিতে ওই দুষ্কৃতী হানা দিয়েছিল, তার মধ্যে একটি হল ওড়গ্রামের নতুনপাড়ায় বড়মা কালী মন্দির এবং অপরটি ওড়গ্রামের রায়পাড়ার ক্ষ্যাপাকালী মন্দির । দুই মন্দিরই শতাব্দী প্রাচীন ৷ অনেক ভক্ত দেবীর কাছে মানতের পর সন্তুষ্ট হয়ে দেবীকে সোনারূপোর গহনা নিবেদন করে যেতেন । এভাবে অনেক সোনারূপোর গহনা জমে গিয়েছিল মন্দিরে । আর ওই গহনাগুলোর মূলত নজর ছিল ধৃত দুষ্কৃতীর । কালীপূজার আবহে সে পরপর দুই মন্দিরে হানা দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার গহনা নিয়ে চম্পট দেয় ।
জানা গেছে,চুরির কিছুদিন আগে গ্রামে একটি ভবঘুরের দল এসেছিল। গ্রামবাসীদের সন্দেহ ওই ভবঘুরের দলের উপর পড়ে । তারা নিজেদের সন্দেহের কথা পুলিশকেও জানায় । সেই মত পুলিশ ওই দলটির সন্ধানে উঠেপড়ে লাগে । ইতিমধ্যে ভাতার থানার পুলিশ সোর্স মারফত জানতে পারে যে দুই মন্দিরের চুরির ঘটনা ঘটনার মাস্টারমাইন্ড আদপে শ্রীখণ্ড গ্রামের বাসিন্দা নন্দন নাথ নামে এক দুষ্কৃতী । শেষে পুলিশ তাকে পাকড়াও করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া কিছু সামগ্রী ও নগদ টাকা ।
পুলিশ জানিয়েছে,ধৃত নন্দন নাথ একজন দাগি দুষ্কৃতী । তার বিরুদ্ধে একাধিক চুরির অভিযোগও রয়েছে । এখন দুই ওড়গ্রামের দুই মন্দিরে চুরিতে আর কোনো দুষ্কৃতী জড়িত ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ ।।